ইন্টারনেট প্রটোকল টিভি বা আইপি টিভি চালু করতে চায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এজন্য ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে পর্যালোচনা করে এটি বাস্তবায়নযোগ্য কিনা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়ার জন্য কী প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয় তা জানার চেষ্টা করছে।
কমিটির অন্যতম সদস্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন জানান, বিষয়টি এখনও ফিল্ড ভিজিবিলিটির পর্যায়ে রয়েছে। আইপি টিভি চালু করলে তা পরিচালনা করতে কেমন জনবল এবং কেমন খরচ হতে পারে তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
ডিএমপি সূত্র জানায়, গত মাসে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অনুষ্ঠিত এক সভায় আইপি টিভি চালু করা নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে ডিএমপি কমিশনার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করে দেন। কমিটির সদস্যরা হলেন– অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস), যুগ্ম কমিশনার (অপস), যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক- দক্ষিণ), যুগ্ম কমিশনার (ট্রান্সপোর্ট) ও উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া)।
ডিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, আইপি টিভি চালু করা হলে সেখানে প্রতিদিন ট্রাফিক আপডেট, ট্রাফিকের সমস্যা নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট প্রচার করা, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক রিপোর্ট, সাইবার অপরাধ ও প্রতারণা সংক্রান্ত সংবাদ প্রচার করা, নিয়মিত বিভিন্ন অপরাধ সংক্রান্তে খবর প্রচার করা এবং ছোট ছোট নাটিকা প্রচার করা যেতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, আইপি টিভি চালু করতে হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৪টি অনুমোদিত আইপি টিভি চালু রয়েছে। যদিও ২০২১ সালে অনুমোদন পাওয়া একটি আইপি টিভিও সাফল্যের মুখ দেখেনি।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিজস্ব একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে। এছাড়া পুলিশ সদর দফতর থেকেও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল পরিচালনা করা হয়। প্রথম দিকে জাঁকজমকভাবে এগুলো চালু করা হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে সংবাদ কপিপেস্ট করে প্রচার করা হয়। এছাড়া পুলিশের উদ্ধারজনিত প্রেসরিলিজ ও বদলী-পদায়নের সংবাদগুলো প্রচার করা হয়। আলাদা করে কোনও নিউজ পোর্টালই স্বতন্ত্র্য ভূমিকা রাখতে পারেনি। অথচ চাইলে অপরাধের ধরন, কারণ, প্রতিকারসহ নানারকম বিশ্লেষণধর্মী লেখা প্রকাশ ও প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করা যেত। এই অবস্থায় আইপি টিভি চালু করা হলেও একই অবস্থা হবে।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, স্বল্প খরচে অনলাইন পোর্টাল চালু করা গেলেও আইপি টিভি চালু করতে হলে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় হবে। কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। এছাড়া সম্প্রচারের জন্য ইকুইপমেন্ট কিনতে হবে। এসব খাতে যদি অর্থ ব্যয় করার পর সেটি থেকে কোনও ফিডব্যাক না আসে তাহলে তা মুখ থুবড়ে পড়াটাই স্বাভাবিক।
সংশ্লিষ্টরা আরো জানায়, নতুন করে আইপি টিভি চালু না করে স্বল্প বাজেটে অপরাধ সংক্রান্ত বিভিন্ন সচেতনতামূলক সংবাদ তৈরি করে মূলধারার বিভিন্ন গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই প্রচার করা যেতে পারে। এতেই ভালো ফিডব্যাক আসবে।