ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা ফ্যান, ফলোয়ার, কিংবা সাবস্ক্রাইবারদের ওপর নির্ভরশীল। যার যত বেশি ফ্যান, ফলোয়ার ও সাবস্ক্রাইবার তার পোস্টে তত বেশি রিচ।
এই রিচ বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমে অনেকেই পয়সা খরচ করে কিছু ফেক, পেইড ফলোয়ার বাড়িয়ে নেন। প্রশ্ন হচ্ছে-এসব ফলোয়াররা কি আসলেই কাজে আসে?
কনটেন্টের রিচ হচ্ছে প্রচুর। কমেন্ট আসছে ভরে ভরে। তবে সেভাবে পকেট ভরছে না ক্রিয়েটারের! ভিউজের সংখ্য়া চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার মতো হলেও সাবক্রাইবারের সংখ্য়া বাড়ছে না? ফেক ফলোয়ারের ফাঁদ নয় তো? হাতে গোনা কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটাররা বাদে সেভাবে পকেট ভরাতে ব্যর্থ হচ্ছেন অনেকেই।
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রি বহরে বেড়েছে অনেকটাই। তবে অনেক ক্রিয়েটারই হয়তো ফেক ফলোয়ারের ফাঁদে পড়ে গিয়ে প্রত্যাশিত অর্থ পাচ্ছেন না। সম্প্রতি এক সমীক্ষা সামনে এসেছে, সেটা জানাচ্ছে, ইনস্টাগ্রামের প্রায় দুইয়ের তিন অংশ ফলোয়ারই ফেক। শতকরার হিসেবে ধরলে প্রায় ৬০ শতাংশ।
মূলত বিউটি ও ফ্যাশনকেন্দ্রিক কনটেন্ট যে ক্রিয়েটাররা বানান, তাদের প্রোফাইলে ফেক ফলোয়ারের সংখ্য়া সবথেকে বেশি। বাকি ক্রিয়েটাররাও বা প্ল্যাটফর্মগুলোও বাদ যাচ্ছেন না। বিভিন্ন সংস্থা তাদের প্ল্যাটফর্মে থাকা কনটেন্টের ভিত্তিতে অডিট করে ক্রিয়েটারদের টাকা দেওয়ার আগে সেই ফেক ফলোয়ারদের ধরতে পেরে আটকে দিচ্ছে টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খ্যাতনামা কনটেন্ট ক্রিয়েটর জানাচ্ছেন, ‘‘ইনস্টার মতো প্ল্যাটফর্মে কোনও প্রোডাক্টের প্রোমোশন করে দিলে টাকা ও ফলোয়ার বাড়িয়ে দেওয়ার অফার পান অনেক ক্রিয়েটারই। টাকা বা কোনও ডিলের বিনিময়ে কেউ কেউ ফলোয়ার একলাফে অনেকটা বাড়িয়ে নেওয়ার রাস্তাতে হেঁটে কনটেন্ট থেকে পাওয়া টাকা হারান। আবার অনেকের অজান্তেই ফেক ফলোয়ারের সংখ্যা বেড়ে যায়।
আর তাতে মার খায় জেনুইনলি বানানো কনটেন্টের থেকে প্রাপ্য টাকা। কীভাবে সেটা বোঝা যাবে?
এই কনটেন্ট ক্রিয়েটরের ভাষ্য, ‘অনেক ক্ষেত্রে কমেন্ট সেকশনে স্মাইলি, কনটেন্টের সঙ্গে মিল না থাকা কোনও লিংকের মতো একাধিক গার্বেজ দেখা যায়। সেটা সব প্ল্যাটফর্মেই। সেগুলো ডিলিট করা ছাড়া উপায় নেই।’
পুরো বিষয়টার একটা অন্য দিকও আছে। কোনও কোনও ব্র্যান্ড তাদের প্রোমোশনের জন্য হয়তো ভুল ক্রিয়েটারদের বেছে নিচ্ছে। একদিকে, ফেইক ফলোয়ারের ফাঁদে পড়ে যাওয়া কেউ হয়তো প্রাপ্য সুযোগ পাচ্ছেন না।
আবার অন্যদিকে ব্র্যান্ডগুলো হারাচ্ছে জেনুইন কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের। তাই সোশ্যালে ঘুরছে এমন কনটেন্ট যার মেরিট হয়তো খানিক কম। অনেক ভালো কনটেন্ট দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ।