বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ব্লক বরাদ্দ দিতে পেট্রোবাংলার আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিতে পারে মার্কিন প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান এক্সন মবিল, মার্কিন প্রতিষ্ঠান শেভরন, থাইল্যান্ডের পিটিটি এবং মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস।
সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ২৪টি ব্লক বরাদ্দ দিতে প্রায় এক যুগ পর আজ রোববার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে সরকারি সংস্থা পেট্রোবাংলা।
বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা এবং পেট্রোবাংলার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই দরপত্রের ঘোষণা দেওয়া হয়।
অগভীর ৯টি এবং গভীর সমুদ্রে ১৫টি ব্লকের জন্য এ দরপত্রে অংশ নিতে পারবে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি-আইওসি।
দরপত্রে এক্সমবিলের অংশ নেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এক্সন মবিল এবারের দরপত্রে অংশ নেবে।’
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার ইনডিপেনেডেন্টকে জানিয়েছেন, ‘এক্সন মবিল দরপত্রে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত পাচ্ছি। দেখা যাক কি হয়। কারণ এখনো সময় আছে।’
গত বছরের মার্চে আমেরিকার প্রভাবশালী কোম্পানি এক্সন মবিল একসাথে ১৫টি ব্লক কোন রকম দরপত্র ছাড়া বরাদ্দ নিতে সরকারের কাছে আবেদন করে। এ জন্য তারা ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণাও দেয়।
কিন্তু গত মাসে সরকার তাদের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে। এক্সন মবিলের ঢাকা সফররত দলকে গত মাসে জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলেছে, এভাবে ব্লক বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এরপর তারা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, ২০১২ সালের ডিসেম্বরের পর এবারই আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার একসাথে ১৪টি ব্লক বরাদ্দ দিতে দরপত্র আহবান করেছে। এর আগে ২০১৬ সালে বিশেষ আইনে (কোন দরপত্র ছাড়া সমাঝোতার মাধ্যমে) পসকো-ডাইয়ুকে একটি ব্লক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
২০১২ সালে ভারতের ওএনজেসিকে এসএস ৪ এবং ৯ নম্বর এবং অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি সান্তোসকে এসএস ১১ নম্বর ব্লক বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। এরমধ্যে ভারতের ওএনজেসি গত ১০ বছর ধরে সমুদ্রে অনুসন্ধানের আসল কাজ অর্থাৎ কোন কূপ খনন করতে পারে নি।
আর পসকো ডাইয়ু সম্ভাবনাময় একটি স্তরে কূপ খনন করতে চাইলেও সরকার বেঁধে দেওয়া গ্যাসের দাম বাড়াতে চাইনি বলে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যায়। এ কারনে এবারের মডেল উৎপাদন বন্টন চুক্তি-পিএসসি বেশ সংশোধন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মডেল পিএসসির আওতায় বিদেশি কোম্পানিগুলোকে ব্লক দেওয়া হবে।
২০২৩ সালে এ মডেল পিএসসির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার। সংশোধিত এ মডেল চুক্তি অনুযায়ী সাগরে গ্যাস পাওয়া গেলে বিশ্ববাজারে তেলের দামের ১০ শতাংশ ধরে সরকার প্রতি ইউনিট গ্যাস কিনবে। যা বিদ্যমান পিএসসিতে যথাক্রমে অগভীর ও গভীর সমুদ্রে ৫ দশমিক ৬ ডলার ও ৭ দশমিক ২৫ ডলার স্থির দর ছিল।
এবারের আন্তর্জাতিক দরপত্রের ব্যাপারে সোমবার সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা এবং জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করবেন। তাদের সেই সংবাদ সম্মেলনে আরও বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
এবারের দরপত্রে বলা হয়েছে, ১৫ হাজার ব্যারেল তেল এবং ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করেছে এমন কোম্পানি এ দরপত্রে অংশ নিতে পারবে। তবে সেই কোম্পানির কাজের অভিজ্ঞতা অবশ্যই নিজ দেশের বাইরে হতে হবে।