ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। একই সমান জনপ্রিয়তা আছে এ দেশেও। পুরো ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত অসংখ্য হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই নায়িকা। পশ্চিমবঙ্গের তো বটেই, অভিনয় করেছেন এ দেশের অনেক অভিনেতার বিপরীতে।
সংসার বা ব্যক্তিগত জীবনযাপন নিয়ে অনেক তারকা কথা বললেও ঋতুপর্ণাকে খুব একটা কথা বলতে দেখা যায় না। এবার নিজের সংসার নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে নিজের কাজ এবং সংসারজীবনের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘নারীরা অনেকগুলো বিষয় একসঙ্গে সামলাতে পারে। কিন্তু পুরুষরা সেটা পারে না। এ ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে রয়েছে।’
ঋতুপর্ণা বলেন, ‘আমার দাদিমাকে দেখেছি, রান্নাঘর থেকে বাইরের জগৎ সব একা হাতে সামলাতেন। তার কিন্তু স্নাতক স্তরের পড়াশোনাও ছিল না।
কিন্তু আমার মনে হয় নারী হিসেবে এমন সহজাত ক্ষমতা ছিল তার, যে একসঙ্গে অনেক দায়িত্ব নিতে পারত। আর এই ক্ষমতা কিন্তু সময় বা পরিস্থিতির জন্য তৈরি হয় না। নারীদের ভেতরেই থাকে।’
অভিনেত্রী আরো বলেন, ‘দাদিমা তার মেয়েদের খুব ভালোভাবে শিক্ষিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মস্থলে কাজের ক্ষেত্রেও শতভাগ সহায়তা ও সাপোর্ট করেছেন। তারা প্রত্যেকেই ভালো ভালো জায়গায় কাজ করেছেন।
শুধু তিনি নন, আমার মাকেও দেখেছি একসঙ্গে অনেক দায়িত্ব নিতে। অনেক দিক সামলাতে। তবে মেয়েদের নিজের সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। আমি যদি অসহায়, দুর্বল হিসেবে সবার সামনে নিজেকে জাহির করি, মানুষও আমাকে ওই চোখেই দেখবে। তখন আমাকে ঘিরে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের পরিবেশ তৈরি হবে।
আমার ভালো লাগা, ইচ্ছা সব আমাকেই দেখতে হবে। না হলে তো কিছুই করা যাবে না। সময়ে এক এক করে প্রিয়জন হারিয়ে যাবে। মানুষ আরো বিচ্ছিন্ন হবে। কিন্তু এ নিয়ে যদি সারাক্ষণ মন খারাপ করি, তাহলে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনব। কোনো নারীই যেন করুণার পাত্র হিসেবে নিজেকে তৈরি না করে।’
নিজের সংসার নিয়ে ঋতুপর্ণা বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল থেকে কাজ শুরু হয়ে যায় আমার। আমার শাশুড়ি মা হাসপাতালে। তার সব দায়িত্ব আমার। মেয়ের খবর রাখা। ছেলেকে ফোন করা। সংসারের নানা কাজের পাশাপাশি সবই চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি এখন মর্যাদা নিয়ে খুব ভাবি। মানুষের কাছে সব কিছু থাকলেও সে মর্যাদাহীন হলে বিপদ। আমি মাটিতে পড়লে নিজেকেই নিজে উঠিয়ে নিয়ে চলি। সংসার আর কাজ দুটোতেই বিশ্বাস করি। ইন্ডাস্ট্রিতেও দীর্ঘদিন ধরে একা যুদ্ধ করছি। বড় প্রযোজনা সংস্থারা যে আমার সঙ্গে আছে, এমনও নয়।
আমি নিজেই নিজের জায়গা তৈরি করেছি। নতুনদের সুযোগ দিয়েছি। আমি আমার সবটা দিয়ে কাজ করি। কান্না মুছে হাসি ফিরিয়ে আনি। আমি বৃদ্ধি করতে না পারি, সৃষ্টি তো করি। না হলে থমকে যাব।’