অমর একুশে বইমেলার শেষ মুহুর্তে প্রকাশিত প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ জার্নালিজম অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (পিবজা) সদস্য, সাংবাদিক তাসকিনা ইয়াসমিনের ‘ক তে কল্লোল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার মেলায় আবিষ্কার প্রকাশনীর স্টলের সামনে এ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এসময় দৈনিক সবুজ বাংলার চিফ রিপোর্টার রকীবুল হক ও চিফ ফটো সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা, গবেষক ও সিনিয়র সাংবাদিক জিয়াউদ্দিন সাইমুম, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক হৈমন্তী শাহনাজ চৌধুরী (সোমা), আবিষ্কার প্রকাশনীর স্টলের কর্মী সুমি, মুন্নী, কিরণ, ফাতেমা, ইখতিয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশক দেলোয়ার হাসান জানান, ‘ক তে কল্লোল’ সাংবাদিক তাসকিনা ইয়াসমিনের প্রথম গল্পগ্রন্থ। এতে লেখকের বিভিন্ন সময়ে লেখা ছয়টি গল্প প্রকাশিত হয়েছে। এটি মেলায় আবিষ্কার প্রকাশনীর স্টল নম্বর ১০৮, ১০৯ ও ১১০ এ পাওয়া যাচ্ছে।
অপর সদস্য শারিরীকভাবে অসুস্থ সাংবাদিক কপিল ঘোষের তিনটি ব্যতিক্রম বই প্রকাশ করেছে শ্রাবণ প্রকাশনী। শ্রাবণ প্রকাশনী (স্টল নং ৪৬৮-৪৬৯-৪৭০) সহ পাওয়া যাচ্ছে অনলাইন মাধ্যম রকমারিডটকম, বাতিঘরডটকম, বইবাড়িডটকম ও বইফেরীডটকম। সুন্দরের টানে মঙ্গল শত্রু (সুন্দরবনাঞ্চলের ৫০ বছরের গল্প ১৯৭১-২০২১), প্রথম খণ্ড : প্রথম প্রকাশ হয় এই বইটি। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন কবি রবীন আহসান। সুন্দরের টানে মঙ্গল শত্রু (প্রথম খণ্ড) প্রকাশের প্রথম তিন মাসে প্রথম সংস্ককরণ শেষ যায় এবং চাহিদার প্রেক্ষিতে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ হয়।
পিবজার নেতৃবৃন্দ একুশের বইমেলায় উপস্থিত হয়ে সদস্যদের প্রকাশিত বই কিনে বিভিন্ন মানুষকে উপহার দেন। নতুন নতুন লেখকদের কে উৎসাহিত করার জন্য নেতৃবৃন্দ তৃণমূলের পাঠকদের কে উজ্জীবিত করার কাজ করে যাবেন বলে জানান।
সুন্দরবনাঞ্চলের মানুষের রীতি-নীতি, প্রথা-বিশ্বাস, বর্ণবৈষম্য, লোকসাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ ও উন্নয়ন বিষয়ক বিগত ৫০ বছরের (১৯৭১-২০২১) সত্য ঘটনার গল্পরূপ- ‘‘সুন্দরের টানে মঙ্গল শত্রু।’’ এখানে বনবিবির পুঁথি, গাজীর আসা, হাচ্চেগানের বাস্তুশাস্ত্রের কাহিনী যেমন বর্ণিত হয়েছে- তেমনি রয়েছে সমাজের সম্মানিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিভাবে গ্রামের স্বভাবকবি ও চারণকবিদের কবিগান ও ভাবতত্ত্বের গানের পাণ্ডুলিপি দেখার কথা বলে নিয়ে চিরকালের জন্য গায়েব করে দেয়। সুন্দরবনের বাঘ-কুমিরের ভয়, মুক্তিযুদ্ধকালে হায়নাদের ভয়, বর্তমানে উন্নয়ন ও বৈষম্যের ভয়সহ নানা প্রতিকুলতার মধ্যে কিভাবে বেঁচে থাকে মানুষ, বেঁচে থাকে বাংলার সংস্কৃতি সেই সব কাহিনী অত্যন্ত সাবলীলভাবে গল্পাকারে প্রকাশ হয়েছে গবেষণামূলক এই বইটিতে।
বোহেমিয়ান যুদ্ধজীবন : এক কিশোর বাড়ি হতে পালিয়ে অহযোগ আন্দোলনকালে গ্রাম হতে ঢাকায় চলে যায়। নীলক্ষেত, শাহাবাগ, টিএসসি, চারুকলা ইনস্টিটিউট এলাকায় ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পাশের পার্কে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যে দেখে, সুন্দরবন এলাকার গ্রামে যখন রাজাকারের লুটপাট করতে আসে তখন হিন্দু-মুসলিম সকল বন্ধুরা মিলে ওদের প্রতিহত করে। এরপর সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে হাজার হাজার নৌকায় চড়ে শরনার্থীরা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। এক মা মেয়ের উপর সহ্য করতে না পেরে বটির এক কোপে এক রাজাকারের মাথা ধড় হতে আলাদা করে ফেলে। সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা এই উপন্যাসটি কিশোর-কিশোরীদের উপযোগী। শ্রাবণ প্রকাশনীর এই বইটি প্রচ্ছদ করেছেন কবি রবীন আহসান।
মোবাইল ভূতের খোঁজে : সন্তান হারানোর বেদনা তুলে ধরেছেন ‘মোবাইল ভূতের খোঁজ ‘ বইয়ের প্রচ্ছদ চিত্রশিল্পী। তিনি ছেলেকে চিত্রশিল্পী বানাতে চেয়েছিলেন। সেই একমাত্র সন্তান মোবাইলে ব্যস্ত চিকিৎসকের ভুল ব্যবস্থাপত্র দেয়ার সপ্তাহ খানেক পর মারা যায়।
এরপর সন্তানের রেখে যাওয়া পেন্সিল-রঙ-তুলি হাতে তুলে নেন সন্তান হারা পিতা। তুলে ধরেন মোবাইল কিভাবে সবাইকে গ্রাস করে। মোবাইল যেন ভূতরূপে আবির্ভূত হয়! সেই ভূতের খোঁজে বের হয় দুই কিশোর। সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা রহম্যময় বইটি প্রকাশ করেছে শ্রাবণ প্রকাশনী (স্টল নং ৪৬৮-৪৬৯-৪৭০)।
এছাড়াও সহ সভাপতি ম. মাহবুবুর রহমান ভূইয়ার "প্রতিবন্ধিতার প্রতিলিপি" এবং প্রিন্সিপাল এম. এ. মোনায়েমের "মনোবিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে নিজেকে জানুন" বইটি সংগ্রহ করতে পারেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পিবজার সাধারণ সম্পাদক ডা. রথীন্দ্র নাথ সরকার রবিন সংগঠনের সহ সভাপতি ম. মাহবুবুর রহমান ভূইয়া, প্রিন্সিপাল এম. এ. মোনায়েম, অর্থ সম্পাদক তছলিমা খাতুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ বশিরুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য এ আর মামুন, সাধারণ সদস্য সেলিনা শেলী, উম্মে সালমা কেয়া, জাহেদা পারভেজ ছন্দা, আব্দুল হালিম নিশানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের নিয়ে একুশের বইমেলায় উপস্থিত হয়ে সদস্যদের প্রকাশিত বই কিনে বিভিন্ন মানুষকে উপহার দেন। নতুন নতুন লেখকদেরকে উৎসাহিত করার জন্য নেতৃবৃন্দ তৃণমূলের পাঠকদেরকে উজ্জীবিত করারর কাজ করে যাবেন বলে জানান।