উপলক্ষ পেলেই যেন ক্রেতা ঠকাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন একদল ব্যবসায়ী। বিষয়টি পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে আবারও সামনে এসেছে। এক রাতের ব্যবধানে কেজিতে ১০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে গরুর মাংসের দাম।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চন্দ্রিমা হাউজিং বাজারে এই চিত্র দেখা গেছে। বাজারটিতে এদিন সকাল থেকে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা কেজি দরে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার রাতেও একই বাজারে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে গরুর মাংস।
আশিকুর রহমান নামে একজন ক্রেতা বলেন, গতকালও ৭৫০ টাকা কেজি দেখেছি। তার আগের দিন শুক্রবারও একই দাম ছিল। আজ বেড়ে গেছে।
দামবৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করেছেন খোদ ব্যবসায়ীরাও। চন্দ্রিমা হাউজিং বাজারের সবার প্রিয় গরু ও খাসির গোস্ত বিতাণের মালিক আনোয়ার কুরাইশী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘গরুর মাংস ৮৫০ টাকা। গতকাল ৭৫০ ছিল। আজ শবে বরাত তো, তাই দাম বেশি!’
দাম বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক গরুতে ১৫ হাজার টাকা বেশি। আমরা কী করবো? এই ব্যবসায়ী জানান, তিনি গাবতলী গবাদী পশুর হাট থেকে গরু কেনেন।
একই চিত্র দেখা গেছে, মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান বাজার, শিয়া মসজিদ বাজার, টাউন হল বাজার, মিরপুর শাহ আলী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম জানান, এই পুরো দায় সিন্ডিকেটের। গরু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ায়।
রবিউল আলম বলেন, ‘গরুর মাংসের দামটা নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু গরু ব্যবসায়ীরা, ফার্মার অ্যাসোসিয়েশন গরু স্টক করে। তখন দামটা বেড়ে যায়। আমি সিটি করপোরেশনকে বলেছি, রোজা উপলক্ষে ১০ দিন, কোরবানি উপলক্ষে ১৫ দিনের জন্য বর্ডার খুলে দেন। ইন্ডিয়ান গরু আসুক। তাহলে দামটা ঠিক হবে। আমাদের দেশের গরু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করতে পারবে না।
এই মাংস ব্যবসায়ী সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘আসলে সরকার কি সিন্ডিকেট ভাঙতে চায়?’
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ভর্তুকি মূল্যে সারাদেশে মাংস বিক্রির যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই ব্যবসায়ী।
বর্তমানে দেশে গরু মাংস বিক্রি কমেছে বলেও জানান এই মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতা। তার মতে— দুই বছরের ব্যবধানে গরুর মাংস বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে। এর কারণ চড়া দাম।
রবিউল আলম জানান, এই অবস্থাতেও ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন খিলগাঁও এলাকার মাংস ব্যবসায়ী খলিল।
তিনি বলেন, খলিল লাভ কম করে। বিক্রি অনেক বেশি। দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ মণ মাংস বিক্রি করে। এটা ছোট বিষয় না। এখন কেউ যদি তার থেকে দেখে না শেখে, তাহলে তো কিছু করার নেই।