আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আসন্ন শবে বরাত ও পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে বেড়েই চলেছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম। বাজারে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও চড়া দামে গিয়ে আটকে আছে। এ ছাড়া পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, তবে স্থিতিশীল রয়েছে সবজির দাম।
শীতের ভরা মৌসুমেও চড়া দামে বিক্রি হয়েছে সবজি, তবে বসন্তের শুরুতে দাম সামান্য কমেছে। বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অবশ্য এখনও নিত্যপণ্যটির দাম বেশি। সকাল থেকে রাজধানীতে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে অন্য শুক্রবারের তুলনায় বাজারে ক্রেতার উপস্থিতিও কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেছে।
বাজার ঘুরে আরও দেখা যায়, শীতের শিম, মুলা, শালগম, ফুলকপি ও বাঁধাকপি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার মধ্যে। যা গত সপ্তাহের চেয়ে প্রকারভেদে ১০ থেকে ২০ টাকা কম। এর মধ্যে প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া আলুর কেজি ৩০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপের ৪০ টাকা, টমেটো গাজার ও শসার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ও করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রোজার বাজারে প্রায় প্রতিবছরই দাম বাড়ে চিনির। এবার দাম কমাতে পণ্যটি আমদানিতে কিছুটা শুল্কছাড় দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া ভোজ্যতেল চাল ও খেজুরের শুল্ক কর কমানো হয়েছে। তবে এসব পণ্যের দামে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। রাজধানীতে এখন এক কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। গত বছর একই সময়ে দর ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা, পেঁয়াজ, মাছ, মাংস ও ডিমের দাম এখনও চড়া।
বাজারে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। ভোটের আগে প্রতি কেজির গরুর মাংস ৬০০ টাকা পর্যন্ত নামলেও ভোটের পরে তা ৭০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে আরও দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। গরুর মাংসের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, ‘রোজা ও কোরবানিকে সামনে রেখে খামারিরা গরু বিক্রি কমিয়েছে। সেজন্য বাজারে সরবরাহ কম, দাম বাড়ছে।’
গরুর মাংসের দাম বাড়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। সব মিলিয়ে মানুষ স্বস্তিতে নেই। যাত্রাবাড়ীতে কাঁচা বাজারে একজন ক্রেতা বলেন, ‘কোনো কিছুর দাম কমছে না। একবার বাড়লে সেটা আর কমে না। আমরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। আর সেটা দেখার কেউ নেই।’
বাজারে চড়া দামে আটকে আছে ব্রয়লার ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। প্রতি হালি বাদামি ডিম ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বড় বাজারে। আর পাড়া মহল্লার দোকানে প্রতি হালি ডিমের দাম ৫০ টাকা, ডজন ১৫০ টাকা। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শতক পেরিয়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম এখনও কমেনি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। একইসঙ্গে চড়া দামে আদা ও রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে।