শেষ উইকেটে রংপুর রাইডার্সের দরকার দুই রান। কাইল মায়ার্সের শেষ চার বল কোনো রকমে ঠেকিয়ে দেন এগারো নম্বর ব্যাটার হাসান মাহমুদ। তাতে শেষ ওভারে স্ট্রাইক পান শামীম হোসেন পাটোয়ারি।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের প্রথম বল থেকে কোনো রান নিতে পারেননি শামীম। তবে দ্বিতীয় বল থেকে একরান নিয়ে ম্যাচ টাই করেন। সাইফউদ্দিনের তৃতীয় বল হাসানের ব্যাটের কানায় লেগে চার হলে এক উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় পায় রংপুর।
এর আগে ফরচুন বরিশালের ১৫১ রান তাড়ায় শুরুতেই আউট হন প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা মমিনুল হক। এরপর বেন্ডন কিং ও সাকিব আল হাসানের ৫৩ রানের জুটি।
২২ বলে ৪৫ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্টাম্পড হন কিং। তাঁর ইনিংসে ৪ ছক্কা ও ৩টি চারের মার রয়েছে। খানিক পরে মিরাজের বলে অতিরিক্ত ফিল্ডার প্রীতম কুমারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাকিব আল হাসান। ১৫ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ২৯ রান করেছেন তিনি।
সাকিবের বিদায়ের পর দ্রুতই নুরুল হাসান সোহান ও শেখ মেহেদীকে হারায় রংপুর। তবে ষষ্ঠ উইকেটে জিমি নিশাম ও টম মুরস ৩১ রান যোগ করেন। মুরসকে ১৪ রানে ফেরান ওবেদ ম্যাককয়। দলীয় ১৩৭ রানে নিশামকে ফিরিয়ে জিমিয়ে যাওয়া কিছুটা উত্তেজনা যোগ করেন ম্যাককয়। ১৭ বলে সমান দুই চার ও ছক্কায় ২৮ রান করেছেন নিশাম।
এরপর দ্রুত ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ও আবু হায়দারকে রনিকে আউট করে রোমাঞ্চ জাগিয়ে তোলেন মায়ার্স ও ম্যাককয়। যদিও শেষ পর্যন্ত রংপুরের কাছে হার মেনেছে বরিশাল।
অথচ কী দুর্দান্ত শুরই না করেছিল বরিশাল।
প্রথম ১০ ওভার শেষে মনে হয়েছিল, বড় স্কোরই গড়তে যাচ্ছে তারা। টম বেন্টন আর তামিম ইকবালের ওপেনিং জুটি থেকে আসে ৩৮ রান। কিন্তু পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসে রংপুরকে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। ঝোড়ো শুরুর পর সাকিবের প্রথম বলে আউট হন তামিম ইকবাল।
বরিশাল অধিনায়ক ২০ বলে তিন চার ও দুই ছক্কায় ৩৩ রান করেন। তামিমের বিদায়ের পর বেন্টনকে নিয়ে আক্রমণের ধারা বজায় রাখেন কাইল মায়ার্স। এই সময় কিছুটা ছন্দহীন বেন্টনও হাত খুলতে শুরু করেন। তবে দুজনের জুটি যখন ৭২ রান, বেন্টনকে ফেরান জিমি নিশাম। ২৪ বলে ২৬ রান করেন এই ইংলিশ ব্যাটার।
এরপর ১৩তম ওভারে আক্রমণে এসেই মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার ও মায়ার্সকে ফেরান আবু হায়দার রনি। এবারের বিপিএলের এটি তাঁর প্রথম ম্যাচ। মুশফিক ৫, মায়ার্স ৪৬ ও সৌম্য শূন্য রান করে আউট হন। এখান থেকে আর স্কোর বড় করতে পারেনি বরিশাল। নিজের পরের ওভারে মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ও তৃতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে আউট করেন আবু হায়দার।
শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ১০ ও ওবেদ ম্যাককয়ের অপরাজিত ১২ রানে ১৫০ পার করে বরিশাল। আবু হায়দার ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। বিপিএলে বাংলাদেশের কোনো বোলারের এটাই সেরা বোলিং। তাঁর বোলিংই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।