দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যত উন্নয়ন হবে যানজট তত বাড়বে। ঢাকা শহরের অনেক সমস্যা ছিলো। অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে আবার নতুন করে অনেক সমস্যার উদ্ভব হয়েছে। উন্নয়ন যতই হোক যানজট নিরসনে আইনের প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। তাই যথাযত আইনের প্রয়োগ করায় গুরুত্ব দিতে হবে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ঢাকার যানজট: মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ের প্রভাব শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে ঢাকার যানজট নিরসনে ট্রাফিক আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করে ডুরা সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা।
সেমিনারের আলোচ্য বিষয় তুলে ধরেন বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি আলোচ্য সূচিতে মেট্রোরেলের ব্যবহার ও এক্সপ্রেসওয়ের কার্যকারিতা নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণের এখন মাথাপিছু আয় বেড়েছে। তাই চাহিদা বেড়েছে।
চাহিদার কারণে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। আগে টাকা কম ছিলো মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করতো। এখন মানুষ সাইকেল ব্যবহার করে কেউ গাড়ি ব্যবহার করে। ফলে মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। এই শহরে অনেক সমস্যা ছিলো।
অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে আবার নতুন করে অনেক সমস্যার উদ্ভাবন হয়েছে। এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা রাখার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘মেট্রোরেল সারাবিশ্বের একটি পরীক্ষিত যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা। এই সুফলটাকে আরো বেশি জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বেশ কিছু সুবিধা যোগ করতে হবে। ঢাকা পৃথিবীর জনবহুল শহরগুলোর অন্যতম এবং প্রতি বর্গ কিলোমিটারে সবচেয়ে বেশি মানুষ বসবাস করে এই শহরে। তাছাড়াও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে এই শহরে নাগরিক সুযোগ সুবিধা দিন দিন নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঢাকাকে আধুনিক শহরে পরিণত করতে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। এরই ফলশ্রুতিতে আজকে আমরা ঢাকায় মেট্রোরেল, এক্সপ্রেস ওয়ের মত দ্রুতগতি সম্পন্ন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
ঢাকার সব সমস্যা রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে সব সমস্যা সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।’
মন্ত্রী দখলমুক্ত ফুটপাতের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘হাঁটার পরিবেশ পেলে নাগরিকরা স্বল্প দূরত্বে হেঁটে গেলে তা পরিবেশের জন্য এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে সেক্ষেত্রে হকারদের পুনর্বাসন অথবা তাদের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ দেওয়ার মত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’
যানজটের সমস্যা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একই পরিবারের একাধিক গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে আমাদের চিন্তা করার সময় এসেছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও জবাবদিহিতার ওপর জোর দিয়ে ঢাকা শহরে পার্কিং ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। পার্কিং নিশ্চিত না করলে ব্যক্তিগত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া উচিত না।’