রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বসেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। সপ্তাহের অন্য দিনগুলোর তুলনায় আজ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই বেড়েছে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভীড়। দুপুর গড়াতেই জমজমাট হয়েছে পুরো প্রাঙ্গণ।
মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর বরাবরের মতো প্রিয়জন আর পরিবার নিয়ে পানির ফোয়ারার আশপাশে সময় কাটাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। ছবি আর সেলফিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন তারা। দেখেশুনে প্রয়োজনীয় পণ্য কেনায় ভিড় করছেন বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নেও।
মেলা শুরুর পর দ্বিতীয় শুক্রবার আজ। দুপুরের পর থেকে ক্রেতা সমাগম বাড়তে থাকায় হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে। তারা বলছেন, ছুটির দিনগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই উপচেপড়া ভিড় থাকে মেলা প্রাঙ্গণে। বেচা-বিক্রিও বেশ জমে ওঠে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন অফার ও পণ্য ছাড় দিচ্ছেন তারা।
মেলা জমিয়ে তুলতে ও ক্রেতা আগ্রহ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকারও। এবার মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে উত্তরা বা মতিঝিল থেকে যারা মেলায় যাবেন তারা মেট্রোরেলে এসে ফার্মগেট থেকে বাসে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারবেন। মেলায় গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
তৃতীয়বারের মতো বাণিজ্য মেলায় নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ভাড়ায় যাত্রী সেবা দিচ্ছে বিআরটিসিও। কুড়িল বিশ্বরোড, খেজুর বাগান (ফার্মগেট), নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশে বিআরটিসি বাস ছেড়ে যাবে। মেলা শেষে নির্দিষ্ট রুটগুলোতে যাত্রীদের নিরাপদে পৌঁছে দেবে বিআরটিসি। প্রতিদিন প্রায় ৬০টি বাস চলাচল করবে এবং ছুটির দিনে প্রায় ২০০ বাস চলাচল করবে।
কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ টাকা, খেজুর বাগান (ফার্মগেট) থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ টাকা। নারায়ণগঞ্জ থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০ টাকা। নরসিংদী থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০ টাকা।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৪ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের বাণিজ্য মেলায় প্রবেশের জন্য টিকিট মূল্য গতবারের চেয়ে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর শিশুদের টিকিটের মূল্য ২০ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ টাকা।
এবারের আয়োজনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা ৩৫১টি। এছাড়া দুই হলে ১৭৪টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে থাকছে রেস্তোরাঁ, মসজিদ, ব্যাংক, এটিএম বুথ, শিশু পার্ক এবং মা ও শিশু কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর ১ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্য মেলা শুরু হলেও এবার নির্বাচনের কারণে পিছিয়ে যায় মেলা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে। ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলে স্থায়ী কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্যমেলার আয়োজন হয়ে আসছে। এবারের মেলা চলবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।