প্রকাশ: বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪, ১:৪০ অপরাহ্ন
মানিকগঞ্জে আফরোজা আক্তার (১৩) নামে সপ্তম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই স্কুলছাত্রী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো কিন্তু প্রেমিক অস্বীকার করায় সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দর (টেনারিমোড়) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ৯টার দিকে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে পুলিশ।
আফরোজা আক্তার এই গ্রামের আজগর আলীর মেয়ে। সে গড়পাড়া বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে নিহতের বড় বোন সুরমা আক্তার বলেন, পার্শ্ববর্তী বাড়ির মো. মকুল মিয়ার ছেলে সাব্বির হোসেনের (১৯) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার বোনের। দুই মাস আগে আমাদের বাড়িতে রাতে সাব্বির ও আমার বোনকে এক কক্ষে সন্দেহজনকভাবে দেখতে পাই। মান সম্মানের ভয়ে কাওকে কিছুই বলিনি তখন। শুধু মাত্র সাব্বিরের পরিবারে কছে জানাই ছেলেকে শাসন করার জন্য। এরপরও সাব্বির আমার বোনকে স্কুলে যাওয়ার পথে বিরক্ত করতো বলে জানতে পারি। গত দু্ইদিন আগে আমাদের পার্শ্ববতী বাড়ির ৮ বছরের শিশুকে দিয়ে আমার বোন প্রেগনেন্সির টেস্ট কিট সাব্বিরের কাছে পাঠায়। এই বিষয়টি দেখতে পান পাশের বাড়ির ভাবি। তিনি এই বিষয়টি আমার দাদির কাছে জানান।
নিহত আফরোজার দাদি মানিকজান বেগম বলেন, ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমার নাতনী আফরোজাকে ডাক দিয়ে ঘরের পিছনে নিয়ে যাই। সেখানে নিয়ে জিজ্ঞাসা করি। তখন আমার নাতনি আমার কাছে বলে সাব্বিরের সঙ্গে তার এক বছর ধরে প্রেম। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকবার অবৈধ সম্পর্ক করে সাব্বির। সে জন্য আফরোজার পেটে বাচ্চা আসে। সে কারণে গোপনে প্রেগনেন্সির টেস্ট কিট (কাঠি) এনে পরীক্ষা করে আমার নাতিন। সেই কাঠিতে দুই দাগ উঠলে নাতনী বুঝে যায় তার পেটে সাব্বিরের বাচ্চা। তখন সেই কাঠিটা আবার সাব্বিরের কাছে পাঠায়।
তিনি বলেন, সম্পর্ক থাকার বিষয়টি সাব্বির অস্বীকার করলে আমার নাতনী দুশ্চিন্তায় আত্মহত্যা করে।
এই বিষয়ে জানার জন্য সাব্বির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবা মকুল মিয়া বলেছেন, ছেলের সঙ্গে আফরোজার প্রেমের কথা তিনি জানেন না। আফরোজা আমার মেয়ের সঙ্গে খেলাধুলা করতো।
ছেলে কোথায় গেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমার ছেলে কলেজে গেছে। তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে গেছে।
সদর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, এই বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আফরোজার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়ে আসা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান।