
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যে চার জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে, তার মধ্যে একটি গাজায় আটক থাকা কোনো জিম্মির নয় বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। হামাস এরই মধ্যে নড়বড়ে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা।
আজ শুক্রবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ দাবি করে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, হস্তান্তর করা মরদেহগুলোর মধ্যে একটি আলোচিত বিবাস পরিবারের শিশু কেফির বিবাস ও অন্যটি তার ভাই আরিয়েলের বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তৃতীয় মরদেহটি তাদের মা শিরির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার কিংবা অন্য কোনো জিম্মির সঙ্গে এ মরদেহের মিল পাওয়া যায়নি। মরদেহের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
এক বিবৃতিতে শিরি ও সব জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, এটি হামাসের ভয়াবহ লঙ্ঘন, যারা চুক্তি অনুসারে চার নিহত জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য।
এদিকে, জিম্মি ওদেদ লিফশিৎসের পরিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তার মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবির বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার সময় জিম্মি হওয়া শিশু কেফির বিবাস, আরিয়েলসহ চার মরদেহ হস্তান্তর করার পর সংগঠনটির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
হামাসের সদস্যরা জনসম্মুখে সাজিয়ে রাখা চারটি কালো কফিন হস্তান্তর করেন। এ সময় ফিলিস্তিনি জনতা ও হামাসের অনেক যোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন। এভাবে মরদেহ হস্তান্তরের নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত মাসে স্বাক্ষরিত গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীন কেফির, আরিয়েল, তাদের মা ও লিফশিৎসের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
মরদেহগুলোর কফিনবাহী গাড়ির বহর যখন এগেচ্ছিল, তখন গাজা সীমান্তের কাছে বৃষ্টির মধ্যে ইসরায়েলিরা শ্রদ্ধা জানাতে রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিলেন।
ইসরায়েলের নির ওজ এলাকা থেকে কেফির, আরিয়েল, তাদের মা শিরি ও বাবা ইয়ার্ডেনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ওই সময় কাফির বিবাসের বয়স ছিল ৯ মাস।
হামাস ২০২৩ সালের নভেম্বরে বলেছিল, বিবাস পরিবারের ছেলেরা ও তাদের মা ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সে সময় তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
চলতি মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইয়ার্ডেন বিবাসকে গাজা থেকে জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ওদিকে লিফশিৎসকে যখন নির ওজ থেকে অপহরণ করা হয়েছিল, তখন তার বয়স ছিল ৮৩ বছর। তার স্ত্রী ইয়োশেভেদকেও অপহরণ করা হয়েছিল। তার বয়স ছিল ৮৫ বছর। অবশ্য দুই সপ্তাহ পর অন্য এক নারীর সঙ্গে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।