প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশে মানবাধিকার এবং বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার সরকার কোনো সমালোচনায় বিরক্ত হয় না বরং সমালোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় বিকেলে একটি হোটেলে অর্ধ ডজনেরও বেশি বিশ্বের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সাক্ষাতে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লব এবং গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনা সরকারের শাসন আমলে চালানো নৃশংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার ও জবাবদিহিতা নিয়ে আলোচনা হয়। শেখ হাসিনার আমলে প্রায় তিন হাজারের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের ওপর গুরুত্বারোপ করেন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মকর্তারা।
এছাড়া, তারা নিরাপত্তা সেক্টর সংস্কার, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং অধিকতর তদন্ত, একনায়কতন্ত্রের সময় বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের রাখা ডিটেনশন কেন্দ্রগুলোতে অবাধ প্রবেশাধিকার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
বৈঠকে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন- রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও এ বৈঠকে যোগ দেন।
অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত সবার কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যে, নতুন বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিস্থিতি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
পূর্ববর্তী শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন আমলে কীভাবে নাগরিকদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার খর্ব হতো এবং অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কী কী করছে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার সরকার পুলিশসহ প্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। তার সরকার যেকোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানায় এবং অন্তর্বর্তী প্রশাসন মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি বলেন, এই সরকার কোনো সমালোচনায় বিরক্ত হয় না বরং সমালোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
অনুষ্ঠানে আরও কথা বলেন- হংকংভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনের সাবেক অ্যাক্টিভিস্ট মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার প্রমুখ।