পাকিস্তানের মাটিতে পাওয়া অবিস্মরণীয় সাফল্যের পর অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ফোন করেছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে।
দলকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, দেশে ফেরার পর বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। দুয়েক দিনের মধ্যেইে এই সংবর্ধনা দেওয়ার কথা রয়েছে।
এই সংবর্ধনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের ধ্রুবতারা সাকিব আল হাসানের থাকার সম্ভাবনা নেই। দুটি কারণেই তিনি থাকতে পারবেন না। প্রথমত, কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নিতে সাকিব এরই মধ্যে ইংল্যান্ডে পৌঁছেছেন তিনি। আরেকটি কারণ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও তার নামে হত্যা মামলা।
পরিবর্তীত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সাকিব সহসাই দেশে ফিরছেন না। সাবেক সংসদ সদস্য সাকিবের নামে খুনের মামলা এবং তাকে দেশে ফেরাতে আইনি নোটিশ বিসিবিতে পাঠানো হয়েছে। বিসিবিও পাল্টা নোটিশ পাঠিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করেছে। সাফ জানিয়েছেন, দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত সাকিব খেলা চালিয়ে যাবে।
সেপ্টেম্বরেই বাংলাদেশের ভারত সফর রয়েছে। সেখানে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড থেকে সাকিব সরাসরি ভারতে যোগ দেবেন। এরপর দেশে ফিরবেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে।
তবে সাকিবের পাশে আছে পুরো ক্রিকেট দল। এমনটাই জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত। প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া সংবর্ধনায় যদি সাকিবকে নিয়ে কথা ওঠে তাহলে কথা বলার কথা বললেন শান্ত।
বুধবার রাতে পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা। প্রথম বহরে শান্ত, শরিফুল, নাহিদ রানা, লিটন দাশরা ফিরেছেন। বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শান্তকে সাকিব প্রসঙ্গে কথা বলতে হয়েছে।
শান্ত বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি দেখা করতে চেয়েছেন যেটা আমি আগেও বলেছি। সাকিব ভাইয়ের বিষয়টি ভিন্ন। সাকিব ভাইয়ের বিষয়টা নিয়ে অবশ্যই যদি দেখা হয়, এটা নিয়ে যদি কথা ওঠে প্রত্যেকেটা খেলোয়াড় সাকিব ভাইয়ের পাশে আছে।’
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলীগ থেকে গত সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন সাকিব। তবে গত জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের পুরোটা সময় দেশের বাইরে ছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে মেজর ক্রিকেট লিগ খেলার পর কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ খেলেছেন। সেখান থেকে সরাসরি পাকিস্তান যোগ দিয়ে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেন।
প্রথম টেস্ট চলাকালীন তার নামে হত্যা মামলা করা হয়। দ্বিতীয় টেস্ট খেলা নিয়ে সংশয় থাকলেও বিসিবি তার পাশে ছিল। জানা যায়, সাকিবকে পুরোপুরি নির্ভার হয়ে খেলায় মনোযোগ দিতে বোর্ড থেকে বলা হয়। সাকিবও মাঠে পারফর্ম করে অবদান রেখেছেন দারুণভাবে।
নানাবিধ ঝামেলায় থাকার পরও সাকিবকে পুরোদমে, শতভাগ নিবেদনে মাঠে পাওয়ায় খুশি শান্ত। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারকে নিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেছেন,‘প্রত্যেকেটা খেলোয়াড় সাকিব ভাইয়ের পাশে আছে। এই বিষয়টা আমরা সবাই জানি। সাকিব ভাই খেলার জন্য কতটা নিবেদিতপ্রাণ। খেলার জন্য কতটুকু পাগল। দলের ভালো করার জন্য কতটুকু চিন্তা ভাবনা করে থাকেন।’