প্রকাশ: সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮:১২ অপরাহ্ন
আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যার ঘটনায় লালবাগ থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
এর আগে হাজি মো. সেলিমকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল করে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত হাজি মো. সেলিমকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আদালতে গিয়ে দেখা যায়, বেলা তিনটার পর কড়া পুলিশ পাহারায় হাজি সেলিমকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। এরপর মাথায় পুলিশের হেলমেট ও শরীরে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালত চত্বরে উপস্থিত বিএনপি-সমর্থক আইনজীবী হাজি সেলিমের শাস্তি দাবি করে স্লোগান দেন।
আদালতকক্ষে হাজি সেলিম আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। এরপর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাঁকে আবার আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। হাজি সেলিমের হাতে পরানো ছিল হাতকড়া।
এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত মধ্যরাতে পুরান ঢাকার বংশাল এলাকা থেকে হাজি সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুরান ঢাকার লালবাগ ও চকবাজার এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিম দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ঢাকা-৮ আসন থেকে। পরে ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর কাছে হেরে যান।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন হাজি সেলিম। ওই নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজি সেলিম প্রার্থী হননি। তাঁর বদলে ছেলে সোলায়মান মোহাম্মদ সেলিমকে ঢাকা-৭ আসন থেকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। তিনি নির্বাচিতও হয়েছিলেন।
হাজি সেলিম ও তাঁর স্ত্রী গুলশান আরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। বিচারিক আদালত ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল ওই মামলায় রায় দেন। রায়ে তাঁর ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়।
২০২২ সালে ওই মামলায় হাজি সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। কিছুদিন কারাভোগের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে উচ্চ আদালত তাঁকে জামিন দেন।