আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘কমিশনারস মিট দ্য প্রেসে’ ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের নবনিযুক্ত কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেছেন, এরই মধ্যে কিছু অপেশাদার পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনগত ব্যবস্থা একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিছুটা সময় লাগতে পারে। বিভাগীয় ব্যবস্থার বিষয়টি চলমান রয়েছে।
অপেশাদার পুলিশ কর্মকর্তাদের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব পুলিশ কর্মকর্তা নির্দেশ পালন করতে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার জানান, কিছু উচ্চাভিলাসী ও অপেশাদার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ জন্মেছে। নির্দিষ্ট কিছু দাবি আদায়ের জন্য কর্মবিরতি শুরু করে পুলিশ সদস্যরা। আশা করছি, দ্রুতই সব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে ও ভয় কেটে যাবে। তারা মানুষের জন্য পুরোপুরি কাজ শুরু করবে। সেজন্য তাদের সহযোগিতা করা জরুরি।
কয়েকজন ভিআইপিকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে আপনারা কী জানতে পেরেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনের ইস্যুতে রুজু হওয়া মামলায় রিমান্ডে রয়েছেন। তাদের কেউ অর্থ, পরামর্শ ও বক্তৃতা কিংবা বিবৃতি দিয়ে উৎসাহিত করেছেন এসব বিষয় এই মুহূর্তে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তাদের ইনভলমেন্টের ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছি।
যেসব অপেশাদার পুলিশ সদস্যরা গ্রেপ্তার হয়নি তারা এখন পলাতক কি না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, তাদের বিষয়ে এখনও আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত নেই।
বিশেষ কয়েকটি জেলার পুলিশ সদস্যরা ডিএমপিতে গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে ছিলেন। আপনার দায়িত্ব পালনকালে আরও বিশেষ কিছু জেলার কর্মকর্তাদের পদায়ন হবে কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি এ বিষয়ে একমত না। পুলিশ বাহিনীর সবাই পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করবে। কে কোন জেলা থেকে এলো সেটি বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা চাই একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনী তৈরি করতে। যেখানে সব পুলিশ সদস্যের কাজ হবে পেশাদার।
পুলিশে আস্থার সংকট ফিরিয়ে আনার জন্য আপনারা কাজ করছেন। কিন্তু অপেশাদার পুলিশ সদস্যরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছে তারা ডিএমপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। কীভাবে আস্থার সংকট ফিরিয়ে আনবেন। জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিছুটা সময় লাগবে। তবে আপনারা পরিচ্ছন্ন পুলিশিং দেখতে পাবেন। যাদের আস্থার সংকট বলছেন তারা থাকবে না।
পুলিশে দুর্নীতি রোধে আপনি কী ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রশ্নে মো. মাইনুল হাসান বলেন, আমরা চাই পেশাদার পুলিশ বাহিনী তৈরি হোক। যেখানে কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম ও অন্যায়ের স্থান থাকবে না।
আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছিল। সেসব অস্ত্রের বিষয়ে মো. মাইনুল হাসান বলেন, অনেকের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র যেমন ব্যবহার হয়েছিল আবার অবৈধ অস্ত্রও ব্যবহার হয়েছিল।
পুলিশের প্রতি আস্থা ও সংকট কাটিয়ে উঠতে কতদিন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে মো. মাইনুল হাসান বলেন, নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। আমরা চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে সবার সাপোর্ট চাই আমরা। সবার সাপোর্ট ছাড়া ট্রমা থেকে পুলিশ উঠে আসতে পারবে না।