চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কলেজছাত্র তানভীর ছিদ্দিকী (১৯) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাছান চৌধুরী নওফেলসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে।
গতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে নগরের চান্দগাঁও থানায় নিহত ছাত্রের চাচা মোহাম্মদ পারভেজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এসরারুল হক, জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, চকবাজারের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, নগর আওয়ামী লীগ নেতা বাবর আলী, যুবলীগ নেতা মো. কাইসার, মাহবুব আলম, মহেশখালী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন ওসমান শরীফ ও নোমান শরীফ।ছাড়া আসামি করা হয়েছে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মহিউদ্দীন ফরহাদ, মো. দেলোয়ার, মো. জালাল, মো. ফরিদ, সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি মো. তাহসীন, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হোসাইন অভি, এইচ এম মিঠু, নুরুল আলম প্রকাশ কালা বদা, আরিফ ইফতেকার রশিদ, ওসমান গণি, থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইলিয়াছ বাবুল, মাইনুল ইসলাম শরীফ, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জিয়াউদ্দীন আরমান, যুগ্ম সম্পাদক মনির উদ্দিন, যুবলীগ নেতা মো. ফিরোজ, মো. জাফর, জাফর আলম, মনছুর আবেদীন, আবুল হাসনাত, মোহাম্মদ সুমন উদ্দীন, বাঁশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিজান সিকদার, যুবলীগ নেতা মো. শোয়াইবসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার ভাতিজা তানভীর ছিদ্দিকী গত ১৮ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘শাট-ডাউন’ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর এলাকা থেকে মিছিলযোগে চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের সামনে রাস্তার ওপর এসে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেন। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে বাকি আসামিসহ অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জন চাপাতি, কিরিচসহ মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ওয়াপদা অফিসের দিক থেকে এসে তানভীর ছিদ্দিকীসহ অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে ইট-পাথর নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এতে তানভীরসহ আন্দোলনকারীদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। তানভীরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, গত ১৮ জুলাই বহদ্দারহাটে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হওয়া গুলিবর্ষণের ঘটনায় তানভীর নামে এক কলেজছাত্র নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যার অভিযোগ এনে নিহতের চাচা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি বলেন, মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীসহ ৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে। মামলাটি তদন্ত করার জন্য পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছাবেদ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।