প্রকাশ: সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন
ক্যারিয়ারের সব অর্জনের বিনিময়ে হলেও এবারের ইউরো জিততে চেয়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন। তবে তার সেই স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত স্বপ্নই রয়ে গেছে। দুর্ভাগার তকমা ঘোচাতে পারেননি তিনি। ইউরোর ফাইনালে তার দল স্পেনের বিপক্ষে হেরেছে ২-১ গোলে। ২০১২ সালের পর ফের ইউরোপিয়ান সিংহাসনে বসেছে লা ফুয়েন্তের দল। ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে জিতেছে চতুর্থ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ।
ইউরোর সবশেষ আসরেও ফাইনাল খেলেছিল ইংল্যান্ড। সেবার দলটি হেরেছিল ইতালির বিপক্ষে। আর এবার দলটি হারল স্পেনের বিপক্ষে। বলতে গেলে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারল না ইংল্যান্ড। অথচ, ইতিহাসের প্রথম ইউরো জয়ের খুব কাছেই ছিল দলটি। প্রতিপক্ষ স্পেনের ফুটবলারদের চেয়ে নামেভারে তারকা খ্যাতিতে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ডের ফুটবলাররাই। তবে দিনশেষে হারটাই সঙ্গী হলো তাদের।
জার্মানির বার্লিনে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে আধিপত্য দেখিয়ে ইংল্যান্ড রক্ষণের পরীক্ষা নিয়েছে স্পেনের ফুটবলাররা। যদিও প্রথমার্ধে গোল পায়নি দলটি। প্রথমার্ধে গোল না পাওয়ার একটা ক্ষুধা ছিল স্পেনের। যেই ক্ষুধাটা তারা দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই মিটিয়েছে। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে লামিনে ইয়ামালের বাড়ানো বল দারুণ দক্ষতায় কোনাকুনি শটে জালে জড়িয়ে স্পেনকে এগিয়ে নেন নিকো উইলিয়ামস। ১-০ গোলের লিড নেয় স্পেন। এরপর অবশ্য এক মিনিটের ব্যবধানে আরও একটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল দলটি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটি জালের দেখা পায়নি।
এরপর ম্যাচে ফেরতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায় ইংল্যান্ড। ৬৩ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শট নিলেও সেটি লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বেলিংহাম। ৬৬ মিনিটে ইয়ামালের নেওয়া নিশ্চিত গোলের শটটি ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। নয়তো ম্যাচের দফারফা হয়ে যেতে পারত ওখানেই।
এরপর ম্যাচের ৭২ মিনিটে ফের আক্রমণে যায় স্পেন। গোলের দুর্দান্ত সুযোগ তৈরি করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হতে হয় তাদের। স্পেনের রক্ষণভাগ ফাকা দেখে দ্রুত বল নিয়ে আক্রমণে উঠে ইংল্যান্ড। দারুণ পাসিং ফুটবলে আক্রমণ গড়ে তুলে ইংলিশরা। তবে ততক্ষণে ডি বক্সের ভেতর নিরাপত্তা জোরদার করে ফেলেছে স্পেন। বেলিংহাম শট নিতে না পেরে ডি বক্সের বাইরে কোল পালমারের উদ্দেশে বাড়ান। ভুল করেননি এই তারকা। কোনাকুনি নিচু শটে বল জালে জড়িয়ে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান তিনি।
৮১ মিনিটে ইয়ামাল স্পেনকে এগিয়ে নেওয়ার সেরা সুযোগটা পেয়ে গিয়েছিলেন। ডি বক্সের ভেতর ফাকা জায়গায় দাঁড়িয়ে শট নিয়েছিলেন গোলের জন্য। তবে তার সেই শট খুব সহজেই রুখে দিয়েছে পিকফোর্ড। আসরজুড়ে দারুণ ফুটবল খেলা ইয়ামাল যখন এমন ভুল করে বসেন তখন ম্যাচের পরিণতি খারাপ দিকেই যায়। তবে এদিন ইয়ামালের ভুলের দায় চুকাতে হয়নি স্পেনকে। এর খানিক পরই ৮৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে নিয়েছে স্পেন। মার্ক কুকুরেল্লার পাস আলতু ছুঁয়ায় জালে জড়িয়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন মিকেল ওয়ারজাবাল।
তবে হাল ছাড়েনি ইংল্যান্ড। ম্যাচের ফেরার শেষ চেষ্টাটা তারা চালিয়ে গেছে শেষ অবধি। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে তো গোল পেয়েই গিয়েছিল দলটি। তবে কপাল মন্দ হলে যা হয়। প্রথম হেড গোলরক্ষক রুখে দেওয়ার পর ফিরতি হেডে বল জালে প্রায় জড়িয়েই ফেলেছিল ইংল্যান্ড। তবে এ দফায় গোলরক্ষককে ফাঁকি দেওয়া গেলেও বাধ সাধে দানি ওলমো। নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দিয়েই উল্লাসে মাতেন তিনি। ওখানেই শেষ হয় ইংল্যান্ডের স্বপ্ন যাত্রা। এরপর আর গোল করতে না পারলে স্বপ্নভঙ্গ হয় ইংল্যান্ডের। ২-১ গোলের জয়ে ইউরোর চতুর্থ শিরোপা ঘরে তুলে স্পেন।