পুরো ম্যাচ খেললো ব্রাজিল। কিন্তু গোলের খেলা ফুটবলে গোলের দেখাই মিললো না। একের পর এক আক্রমণ সাজিয়েও কোস্টারিকার জাল খুঁজে পায়নি কোপা আমেরিকার অন্যতম ফেবারিট ব্রাজিল। শেষ পর্যন্ত কোস্টারিকার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো ব্রাজিলিয়ানদের।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ইঙলেউড স্টেডিয়ামে পুরো ম্যাচে একের পর এক গোলের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। কোস্টারিকা পুরোপুরি বাসপার্ক করা ডিফেন্সে খেলেছে। তাদের ব্রতই ছিল যেন, নিজেরা তো গোল দেবো না, গোলের চেষ্টাও করবো না। উল্টো যে কোনো মূল্যে ব্রাজিলের গোল আটকে দেবো।
যার ফলে দেখা গেছে, পুরো ৯০ মিনিটের ৯০শতাংশ সময়ই বল কোস্টারিকার ডি বক্সের আশপাশে ঘোরাঘুরি করছিলো। কিন্তু তাদের কঠিন ডিফেন্সে বল ফিরে আসে। দু’একটি যাও ডিফেন্স ভেদ করতে পেরেছে; কিন্তু গোলরক্ষক প্যাটট্রিক সেকুইরার হাত ফসকাতে পারেনি।
কোস্টারিকার পোস্টের সামনে গিয়ে বারবার খেই হারিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা। কখনও মেরেছেন ক্রসবারে, কখনও বল বাঁচিয়েছেন কোস্টারিকার গোলরক্ষক। বক্সের সামনে থেকে ব্যাকপাস করলেন, স্কোয়ারপাস করলেন- যা কোস্টারিকার রক্ষণভাগকে গুছিয়ে নেওয়ার সময় দিল। আর যখন গোলমুখী শট নিলেন, তখন তা লাগল প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের পায়ে।
প্রথমার্ধে, ৩০ মিনিটের মাথায় মার্কুইনহোস একবার বল জালে জড়িয়েছিলেনও। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ পর ভিএআর চেক করে ঘোষণা দেয়া হলো, গোলটি বৈধ ছিল না। ফলে গোলশূন্যই থাকতে হয় ব্রাজিলকে।
পুরো ম্যাচের ৭৩.৫ ভাগ বল দখলে ছিল ব্রাজিলের। কোস্টারিকার দখলে ছিল মাত্র ২৬.৫ ভাগ। এত বেশিরভাগ সময় বল দখলে রাখতে পারলেও কোস্টারিকার জমাট ডিফেন্সের কারণে তাদের গোল লক্ষ্যে মাত্র ৩টি শট নিতে পেরেছিলো ব্রাজিল। তবে শট নেয়ার চেষ্টা করেছিলো ১৯বার। ৯টি কর্ণার পেয়েছিলো ব্রাজিল। কিন্তু কোনোটাই কাজে লাগাতে পারেনি।
অন্যদিকে কোস্টারিকা ব্রাজিলের গোললক্ষ্যে একটি শটও নিতে পারেনি। চেষ্টা করেছিলো মাত্র ২ বার। কর্ণার কিক নিতে পেরেছে মাত্র ১টি। এসব পরিসংখ্যানই বলে দেয়া ম্যাচের চিত্র কতটা একপেসে ছিলো।
দর্শকাসনে বসে ব্রাজিলের গোল করতে না পারা দেখে মুখ ঢাকলেন নেইমার। চোটের কারণে তিনি খেলতে পারছেন না এবারের কোপায়। কিন্তু তার দল শুরুতেই এভাবে গোলহীন থাকবে, তা হয়তো ভাবতেও পারেননি ব্রাজিলের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।
প্রথমার্ধে মার্কুইনহোসের অফসাইডে বাতিল হওয়া গোলছাড়াও আরও একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিলো ব্রাজিল। রদ্রিগো গোল করার সুযোগ পেলেও ক্রসবারে মারেন। বল ফিরে আসে বারে লেগে।
ভিনিসিয়ুস আর রাফিনহারা একের পর এক মিস করতে থাকায় ম্যাচের ৭১তম মিনিটে এ দু’জনকে তুলে এনদ্রিক এবং সাভিওকে মাঠে নামান ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র। মাঠে নেমেই গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি করেন তারা দু’জন। কিন্তু কোস্টারিকার রক্ষণ কাঙ্খিত গোলটিই হতে দিলো না।
এর আগে প্রথমার্ধের পুরো ৪৫ মিনিট এককভাবেই খেলেছে যেন ব্রাজিল। বল দখলের লড়াইয়ে ব্রাজিলের ৭৫.৩ ভাগ, কোস্টারিকার ২৪.৭ ভাগ। মধ্য আমেরিকার দেশটির জালে একবার বল জড়ালেও শেষ পর্যন্ত সেটার বৈধতা দেননি রেফারি। ভিএআর দেখে গোল বাতিল করে দেয়া হয় অফসাইডের অজুহাতে।
ফলে কোপা আমেরিকায় নিজেদের প্রথম ম্যাচের কোস্টারিকার বিপক্ষে প্রথমার্ধে গোলশূন্যভাবেই শেষ করতে হলো ব্রাজিলকে। মুহুর্মুহু আক্রমণের ঢালি সাজিয়েও একটি গোলের দেখা পেলেন না ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগো, রাফিনহারা।