প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪, ৫:৫০ অপরাহ্ন
মমতাকে না ডেকে নয়া দিল্লিতে তিস্তা ও ফরাক্কার পানি চুক্তি নিয়ে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এতেই চরম ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করার পাশাপশি তিস্তা এবং ফারাক্কার পানি বাংলাদেশকে দেয়ার ব্যাপারে চরম বিরোধিতা করেছেন তিনি।
কেন্দ্র যদি একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেয় তবে তার প্রতিবাদে গোটা দেশজুড়ে বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।
গতকাল সোমবার (২৪ জুন) রাজ্যের সচিবালয় নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে তিস্তা ফারাক্কার পানি বণ্টন নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে তিনি যে সন্তুষ্ট নন, তা পরিষ্কার করে দিয়ে মমতা বলেন, পানির আরেক নাম জীবন। ওরা (কেন্দ্র) জানে না যে উত্তরবঙ্গের একাংশের মানুষ আগামী দিনে খাবার পানি পাবে না। তিস্তায় পানি নেই। ভাবছে গায়ের জোরে উত্তরবঙ্গ থেকে জিতেছি বলে উত্তরবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত করব।'
‘কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার পানি বিক্রি করে দিচ্ছে। সিকিম যখন তিস্তা নদীর উপর ১৪টা হাইড্রো পাওয়ার (জলবিদ্যুৎ) করেছে তখন তারা (কেন্দ্র সরকার) চোখে দেখেনি। আর এখন বলছে সব পানি দিয়ে দাও। কিন্তু দিতে তো আপত্তি নেই। আমার থাকলে তো দেব। আমি বন্ধুত্ব করতে চাই কিন্তু বাংলাকে বিক্রি করে দেয়ার স্বার্থে নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে যথেষ্ট ভালোবাসি। তাদের জন্য আমরা ছিটমহল করে দিয়েছি। আমি নিজে যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম তখন ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ে সার্ভিস করে দিয়েছি। বাস সার্ভিস পরিষেবা চালু করেছি।’
মমতার অভিমত, বাংলাকে বঞ্চনা এবং বাংলার পানি বিক্রি করে দেয়ার অর্থ হল আগামী দিন গঙ্গার ভাঙ্গন আরও বাড়বে, মানুষের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাবে। এমনিতে ফারাক্কায় ড্রেজিং করে না। ফলে কলকাতা বন্দর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গঙ্গার পানি বণ্টনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও আলোচনা রয়েছে আরও একাধিক নদী যার মধ্যে অন্যতম তিস্তার পানি চুক্তি বন্টন। ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির স্বাক্ষরের ব্যাপারে সমস্ত প্রস্তুতি নেয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতায় সেই চুক্তি বাস্তবে রূপ নেয়নি।