আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সেন্টমার্টিন ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার কখনও নতজানু আচরণ করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। বিএনপি-জামায়াত কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দখল হয়ে যাচ্ছে বলে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কাদের।
আজ রোববার (১৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রেখেছেন। তিনি কূটনৈতিক প্রজ্ঞা ও কৌশলের বাইরে গিয়ে এমন কথা বলেছেন, যা শুনে মনে হয় পরিস্থিতি নিয়ে তাদের ন্যূনতম ধারণা নেই। মির্জা ফখরুল ইসলামের বলার আগেই আমি বলেছি, সরকার এখানে নিষ্ক্রিয় নয়। আক্রান্ত হলে পাল্টা আক্রমণে প্রস্তুত আছে সরকার। সেখান থেকে যুদ্ধ জাহাজ এরইমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। যান চলাচল নিয়মিত হয়ে গেছে, যাওয়া-আসা করছে। আমরা গায়ে পড়ে ঝগড়া করবো না। মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই, এখানে উসকানি দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধাবো? সারা বিশ্ব রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যেকোনও সমস্যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চায় সরকার। রোহিঙ্গারা যখন দলে দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছিল, ওইদিক থেকে তখনও কিছু উসকানি ছিল। আমরা উসকানিতে পা দেইনি। গায়ে পড়ে যুদ্ধ বাঁধানোর ইচ্ছে নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আলাপ-আলোচনার দরজা এখনও খোলা আছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহী শেখ হাসিনার সরকার। ভিশনারি লিডার শেখ হাসিনা জানেন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দখল হয়ে যাচ্ছে—এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। বিএনপি-জামায়াত এসব গুজব ছড়াচ্ছে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মিয়ানমার সীমান্তের উত্তেজনা নিয়ে বিএনপি বেহুদা মন্তব্য করেছিল। এখনও তারা সেটাই করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনীসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা সতর্ক আছে। সেন্টমার্টিন সীমান্তে গোলাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে আমরা সতর্ক আছি। সেন্টমার্টিনে গুলিটা আরাকানরা করেছে, মিয়ানমার সরকার করেনি।’
সেন্টমার্টিন সীমান্তে মিয়ানমার যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি এবং গুলির পেছনে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের কিছু অংশ নিয়ে নতুন রাষ্ট্র গঠনে কোনও বিদেশি ইন্ধন আছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে নতুন রাষ্ট্র গঠনে প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন, সেটা অমূলক নয়। আরও কিছু থাকতে পারে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি। তাদের অভ্যন্তরীণ সংকটে আমাদের এখানে উসকানি কেন? আলোচনার দরজা খোলা। তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর বোঝা হয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রথম বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়েছিল বিএনপি সরকার। রোহিঙ্গাদের জঙ্গি কাজে ব্যবহার করেছে তারা। রোহিঙ্গারা বোঝা হয়ে আছে, তাদের ফিরে যেতেই হবে। সে প্রয়াস অব্যাহত আছে। আমরা নতজানু আচরণ কখনও করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না ।’