প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জেল ফেরত হেলেনা জাহাঙ্গীরকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ দিয়েছে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের নেতৃত্বাধীন কমিটি। এমনকি সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য একজন শিল্পীর যে যোগ্যতা লাগে (ন্যূনতম পাঁচটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অবিতর্কিত চরিত্রে অভিনয় করতে হয়) তা তার ছিল না।
তারপরও হেলেনা জাহাঙ্গীরকে সমিতির সদস্য পদ দেয়া হয়েছে। এখন তিনি ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কলি-নিপুণ পরিষদে কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচন করবেন।
সম্প্রতি হেলেনা জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমার গার্মেন্টস কারখানা আছে। সংস্কৃতি অঙ্গনের যাদের চাকরি লাগবে, তাদের আমি চাকরি দিতে পারব। এ জন্য কলি-নিপুণ পরিষদের যে অফার ছিল তা লুফে নিয়েছি।’
শিল্পীদের গার্মেন্টসে চাকরি দেয়া হবে তার এ মন্তব্যে চলচ্চিত্রাঙ্গণে সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিতর্কিত হেলেনা জাহাঙ্গীরের সদস্য হওয়ার খবরে নিন্দা জানিয়েছেন শিল্পীরা।
এবার বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন সমিতির আরেক সদস্য জনপ্রিয় অভিনেত্রী সোহানা সাবা। বিষয়টি নিয়ে ভীষণ বিরক্ত তিনি। এ নিয়ে নিজের ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যদিও স্ট্যাটাসে কারো নাম উল্লেখ করেননি তিনি। তবে স্পষ্ট হেলেনা জাহাঙ্গীরের উপর বিরক্ত হয়েই এমন স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
সোহানা সাবা লেখেন, ভীষণ বিরক্ত লাগছে! একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি— আজকাল যদিও অনেক অসংলগ্ন জিনিসপত্র আশেপাশে দেখেও আর অবাক হই না! বিরক্ত হই না এবং ফেসবুকে এসব নিয়ে তো লেখালেখি করিই না!
স্পেশালি কোভিডের আগে বা কোভিড সমসাময়িক সময়ে, আমাদের আর্টিস্টদের কিছু প্রতিনিধি বারবার একটা শব্দ প্রচলিত করেছিল—‘দুস্থ শিল্পী’। আমি তখন প্রতিবাদ করেছিলাম এই শব্দের!
প্রশ্ন রেখে সাবা বলেন, একজন শিল্পী কি করে দুস্থ হয়? হতেই পারে আর্থিকভাবে সে অসচ্ছল। কিন্তু তার শৈল্পিক সত্তাকে এখানে সবার সামনে চোখে আঙ্গুল দিয়ে তার আর্থিক অবস্থার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে বা সবার কাছে ছোট করে দেখানোর কি আছে? সেই ভয়ংকর সময়টা কেটে গেছে।
কিন্তু গত দুদিন ধরে একজন মহিলা, আমি তাকে খুব ভালো করে চিনি না। শুধু জানি তিনি অনেক অসংলগ্ন কথাবার্তা সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে সবসময় আলোচনায় থাকতে চায় এবং কিছুদিন আগে তার গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছিলেন।
সে মহিলাটা আর্টিস্টদের নির্বাচনকে ঘিরে বলে বেড়াচ্ছেন যে আর্টিস্টদেরকে গার্মেন্টসে চাকরি দিবেন। প্রথমদিকে এই ‘কোড’ চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে দেখে ভাবছিলাম এটা সত্যি হতে পারে না। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে এ ধরনের কথা তিনি বলে বেড়াচ্ছেন।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের কথায় অসম্মানবোধ করছেন জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, গার্মেন্টসে আমাদের যেসব শ্রমজীবী ভাই ও বোনেরা কাজ করেন তাদেরকে আমি কোন ভাবেই ছোট করে বলছি না। তাদেরকে আমি সম্মান করি। তাদের কারণেই আমাদের পুরো দেশের আর্থিক মেরুদন্ড শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কিন্তু এভাবে ফলাও করে একজন শিল্পীকে গার্মেন্টসে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে, সে যে ধরনের ভোট ব্যাংকের কথা বলছে সেটা আমি একজন আর্টিস্ট হিসাবে অসম্ভব অসম্মানিত বোধ করছি!