প্রকাশ: শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪, ৫:২৪ অপরাহ্ন
রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের অগ্নিকাণ্ডে নিজের সন্তান ও স্বজনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে হারিয়ে গেলেন পিরোজপুরের তানজিনা নওরিন এশা (৩২)।
প্রতিবন্ধী মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলেন তিনি। মেয়ের জীবন-সংসার গুছিয়ে দিয়ে মা হাসি নিজেই ছিলেন মৃত্যুর অপেক্ষায়। অথচ তিনি জানেন না তার কলিজার ধন লাশবাহী গাড়িতে ফিরছে।
তানজিনা নওরিন এশা ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তানজিনা নওরিন এশার মা তাঁকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়েছেন। পাত্রস্থ করেছেন জেলার স্বনামধন্য পরিবারে। নাদিম আহমেদের সঙ্গে তানজিনার বিয়ে হয় আট বছর আগে।
তানজিনার সংসারে রয়েছে আরহাম আহমেদ (৬) নামে এক ছেলে। সন্তানের আবদার পূরণ করতে গিয়েই ছেলে এবং অন্য স্বজনদের বাঁচিয়ে নিজেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে পরপারে যাত্রা করলেন।
শুক্রবার সকাল ১০টায় লাশবাহী গাড়ি নিয়ে পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা হন তানজিনার স্বামী নাদিম আহমেদ ও তার পরিবারের লোকজন। এ খবর জানেন না মা হাসি বেগম।
তানজিনা নওরিন এশার চাচাশ্বশুর শাকিল আহমেদ জানান, ছেলে আরহামের বিরিয়ানি খাওয়ার আবদার পালন করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হয় এশা।
এসময় তার সঙ্গে খালাতো ভাইয়ের স্ত্রী লামিয়া ইসলাম ও তার দুই সন্তান ছিল। আগুন লাগার পর এশা তার সন্তান আরহামকে ভাবি লামিয়ার দুই সন্তানসহ বের হওয়ার জন্য আগে যেতে বলে। একটু পেছনেই ছিল এশা। এ সময় লামিয়া তার সন্তান ও আরহামকে নিয়ে বের হয়ে যেতে পারলেও হঠাৎ একটা বিস্ফোরণ হয়।
ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে পথ হারিয়ে আর বের হতে পারেননি এশা। তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে স্বজনরা। কোথাও না পেয়ে স্বজনরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের মর্গে এশার লাশ শনাক্ত করেন।