উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর আহমেদ জানিয়েছেন, বরিশালের উজিরপুরে ভারতের উড়িষ্যার এক নারী বাংলাদেশের ভোটার হতে এসে আটক হয়েছেন। জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে ভোটার করার চেষ্টায় ওই নারীর স্বামী ও তার ভাইকেও আটক করা হয়।
আটক ভারতীয় নারী হলেন- উড়িষ্যা প্রদেশের বালাঙ্গির জেলার পাট নগর থানার বনকা বিহার গ্রামের প্রয়াত শ্যামসুন্দর বড়িয়ালের মেয়ে সাবিত্রী বড়িয়াল। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাতলা গ্রামের এবাদুল হককে বিয়ে করে হালিমা খাতুন নাম রেখেছেন তিনি।
আটক অন্য দুইজন হলেন উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাতলা গ্রামের মৃত সালাম হাওলাদারের ছেলে এবাদুল হক ও এনামুল হক।
বরিশাল জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সী বলেন, বুধবার উজিরপুর উপজেলায় নতুন ভোটার যাচাই-বাছাই ও ফিঙ্গারিং কার্যক্রম শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ওই কার্যক্রম তদারকি করতে তিনি ওই উপজেলায় যান।
নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, ওই নারী সাক্ষাৎকার দিতে এলে তার কথায় সন্দেহ হয়। তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি এদেশের নাগরিক নন বলে স্বীকার করেন। পরে তাকেসহ তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সী জানান, ওই নারী উজিরপুরের ভোটার হওয়ার জন্য পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার বাসিন্দা বাদশা মিয়া ও আনোয়ারা বেগমকে মাতা-পিতা উল্লেখ করেছেন। আবেদনপত্রে তাদের জন্মসনদ ও ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করেছেন।
বাদশা মিয়া ও আনোয়ার বেগম ভারতীয় নারীর স্বামী এবাদুল হকের বোনের শ্বশুর-শাশুড়ী। ভারতীয় নারীকে ভোটার করতে উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারুন অর রশিদ প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।
ভারতীয় ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, উড়িষ্যা থেকে দুই মাস আগে বাংলাদেশে এসেছেন। সাত বছর আগে চোরাইপথে ভারতে যাওয়া এবাদুল হকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। ছনিয়া খানম নামে তাদের পাঁচ বছর বয়সী কন্যাও রয়েছে।
এবাদুল হক জানান, তিনি কাজের জন্য সাত বছর আগে ভারতে যান। সেখানে ভারতীয় ওই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ভারতে তাদের বিয়ে হয়। দুই মাস আগে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চোরাইপথেই বাংলাদেশের এসেছেন।
সাতলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার বলেন, নির্বাচনী তথ্য কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরের পরে তিনি ওই কাগজে স্বাক্ষর দিয়েছেন।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর আহমেদ বলেন, ভারতীয় ওই নারীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের এবং জাল-জালিয়াতির জন্য স্বামী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হবে। পুলিশ বাদী হয়ে ওই মামলা করবে।