সুন্দর ও ঝলমলে চুলের আকাঙ্ক্ষা সবারই কাম্য। কিন্তু প্রতিদিনের ধুলোবালির কারণে আমাদের চুল হয়ে যায় মলিন, প্রাণহীন। দেখা দেয় খুশকির সমস্যা, যা চুল ঝরে পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। ধোয়ার সময় একটুখানি যত্নআত্তিই সমাধান করতে পারে এই সমস্যার।
চুলের গোড়া থেকে সিবাম নামের এক ধরনের তেল নির্গত হয়। বাতাসে উড়ে বেড়ানো ধুলা সেই তেলের সঙ্গে মিশে চুল নোংরা করে ফেলে। তাই সপ্তাহে অন্তত দুবার শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুতে হয়, যা চুলের স্বাস্থ্যে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। জেনে নিতে পারেন সঠিক পদ্ধতিতে চুল ধোয়ার নিয়ম।
প্রথমেই চুলের উপযোগী শ্যাম্পু আর কন্ডিশনার বাছাই করতে হবে। তারপর শ্যাম্পু করার আগে মোটা দাঁতের চিরুনিতে চুল আঁচড়ে জট ছাড়িয়ে নিন। এরপর পুরো চুল ভালোভাবে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিতে হবে। শীতের সময় হলে উষ্ণ পানিতে চুল ধুতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে যেন খুব বেশি গরম পানি না হয়।
একটি বাটিতে বা মগে পরিমাণ মতো শ্যাম্পুর সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে এর ঘনত্ব কমিয়ে নিতে হবে। তারপর পুরো চুলে সেই শ্যাম্পু লাগিয়ে ১৫ মিনিট আঙুল দিয়ে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন হবে, চুলের গোড়া মজবুত করবে। ম্যাসাজের সময় অল্প পানি দিয়ে চুলে ফেনা করলে চুল ভালোভাবে পরিষ্কার হবে। এবার চুল ভালোমতো ধুয়ে ফেলুন।
এরপর দ্বিতীয় দফায় শ্যাম্পু করতে হবে। এবার আর ম্যাসাজ নয়। ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়া থেকে সিবাম বের হয়ে আসবে। তাই শুধু ফেনা করে ধুয়ে নিন। তারপর কন্ডিশনার ব্যবহারের পালা। চুলের গোড়া থেকে দুই-তিন ইঞ্চি পর কন্ডিশনার লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। শীতের দিনে কন্ডিশনার হিসেবে ভিনেগার ব্যবহার করা যেতে পারে। সবশেষে তোয়ালে জড়িয়ে প্রথমে চুলের পানি নিংড়ে নিতে হবে। এরপর চুল খুলে রেখে শুকিয়ে বড় দাঁড়ার চিরুনি ব্যবহার করতে হবে।
সতর্কতা
চুলের উপকার ভেবে অনেকে শ্যাম্পু করার আগে তেল দেন। তবে ময়লা চুলে তেল দিলে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হয়। তাই চুলের পুষ্টি জোগাতে পরিষ্কার চুলে শ্যাম্পু দিন।
চুল ভালোমতো না ভিজিয়ে সরাসরি শ্যাম্পু দেওয়া ঠিক নয়। চুল যেমন ভিজিয়ে নিতে হবে তেমনি শ্যাম্পুতেও পানি মিশিয়ে নিতে হবে।
ময়লা পরিষ্কারের জন্য মাথার ত্বকে জোরে জোরে ঘষা ঠিক নয়। কন্ডিশনার গোড়ায় নয়, মাঝ থেকে আগা পর্যন্ত ব্যবহার করুন। গোড়ায় লাগালে নরম হয়ে চুল পড়ে যাবে।
চুল ধোয়া শেষে তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মোছা উচিত। ভেজা চুল আঁচড়ালেও চুলের ক্ষতি হয়।
শুধু চুল ধোয়ার পদ্ধতি জানা থাকলেই হবে না। কোন চুলে কেমন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন সেটাও জেনে নিতে হবে ভালোভাবে। যাদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত, তাদের তেলহীন এবং কন্ডিশনারের মাত্রা কম- এমন শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ শ্যাম্পু পাওয়া যায়। এ ধরনের শ্যাম্পুতে যদি লেবু আর আমলকীর মতো উপাদান থাকে, যা মাথার তৈলাক্ত ত্বক উপযোগী। মাথার ত্বক শুষ্ক হলে শ্যাম্পু কেনার সময় তাতে শ্যাম্পু-কন্ডিশনারের পরিমাণটা সমান আছে কি না, দেখে নিন।