বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশুর উচ্চতা না বাড়লে বাবা মায়ের দুশ্চিন্তা বাড়ে। বিশেষ করে শিশুরা যখন স্কুলে যাওয়া শুরু করে তখন অভিভাবকেরা বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় সঠিক পুষ্টির অভাবে শিশুদের ওজন ও উচ্চতা বাড়ে না। এজন্য বাড়ন্ত বয়সে তাদের খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে।
দুগ্ধজাত খাবার: শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। এই বিষয়ে ভারতীয় শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল বলেন, “দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড়ের গঠন মজবুত করে। আর থাকে ভিটামিন এ, বি, ডি ও ই। শিশুর বৃদ্ধির জন্য এগুলো জরুরি। তাই শিশুর ডায়েটে যতটা সম্ভব দুধ রাখার চেষ্টা করুন। শিশুকে দই, চিজ়, পনিরও দিন। দিনে অন্তত তিন বার শিশুর ডায়েটে রাখুন দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার।”
সবুজ শাকসবজি ও ফল: অনেক শিশুই সবজি খেতে চায় না। না চাইলে জোর করে খাওয়ানো ঠিক নয়। বরং সারা দিনে অল্প অল্প করে সবজি সেদ্ধ, ফল দিয়ে সালাদ বানিয়ে খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কর। মেথি, পালং শাক, বাঁধাকপির মতো সবজিতে প্রচুর ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। একটি আলুতে রয়েছে তিন গ্রাম ক্যালসিয়াম, এক কাপ ব্রকোলিতে রয়েছে পাঁচ গ্রাম ক্যালসিয়াম। তা ছাড়া শিশুকে সয়াবিনও খাওয়াতে পারেন। দিনে এক কাপের মতো সয়াবিন খেলেই শিশু প্রয়োজনীয় প্রোটিন পাবে।
বাদাম: যদি শিশু দুধ খেতে না চায় বা দুধে অ্যালার্জি থাকে, তা হলে অবশ্যই তাকে বাদাম দিন। কাঠবাদাম, আখরোট, পেস্তা, কাজুবাদাম ক্যালসিয়ামের অভাব মেটাতে পারে। বাদাম শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও অত্যন্ত জরুরি। বাদামে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন ই, যা হাড়ের গঠন মজবুত করে।
মাছ-মাংস-ডিম: উচ্চতা বাড়ানোর জন্য শিশুকে অবশ্যই ডিম খাওয়াতে হবে। ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। তবে শিশুর ওজন যদি বেশি হয়, তা হলে কুসুম বাদ দিয়ে খাওয়ানো ভাল। ডিমে ভিটামিন বি২ থাকে, যা উচ্চতা বৃদ্ধির সহায়ক।
শিশুর উচ্চতা বয়স অনুপাতে না বাড়লে পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন শরীরচর্চায় অভ্যস্ত করুন। যেমন, সাঁতার, স্কিপিং, দৌড়নো, জগিং, সাইকেল চালানো ইত্যাদি। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে এবং পুষ্টিকর খাবার খেলে উচ্চতা ধীরে ধীরে বাড়বে।