রাজধানীর মতিঝিলের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে এক সাংবাদিক ও আদিবাসীসহ অন্তত ১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তারা হলেন- রূপায়া (২৪), ইসাবা (২৫), রেংইয়ংরূ (২৭), ধন জেত্রা (৩২), সৈয়দ আওলাদ (৪৫), জুয়েল মারার্ক (৩৮), ডিবিসি টেলিভিশনের রিপোর্টার মারিয়া নওমি (১৮), শৈলী (২৫), মিশাল (২৪), আরতি (২৬), টনি (২৮) ও শান্তিময় চাকমা (২৭)।
আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে এনসিটিবি সংলগ্ন মেট্রোরেলের নিচে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ও সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুপক্ষের অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
আহত শান্তিময় চাকমা বলেন, আমরা রাজু ভাস্কর্য থেকে শান্তিপূর্ণভাবে যাওয়ার পথে কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমরা অনেকে আহত হই। আমাদের দাবি আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ও পাঠ্যবইয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানিয়েছেন, সংঘর্ষে আহত এক সাংবাদিক ও আদিবাসীসহ ১২ জনকে ঢামেক হাসপাতালে জরুরিভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, নবম-দশম শ্রেণির নতুন সংস্করণের বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’। গত ১২ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এর প্রতিবাদে আজ বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। একই সময়ে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও কর্মসূচি ঘোষণা করে।
দুপুর ১টার দিকে সেখানে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অনেকে আহত হন।