জামিনে মুক্তির পর কারাফটক থেকে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবুল কালাম আজাদকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গতকাল বুধবার রাত আটটার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তির পরই তাঁকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আরিফ আলী। কারাগারের সামনে থেকে আবুল কালাম আজাদকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পরে জানানো হবে।
সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর আজ কারাগার থেকে মুক্তি পান। তাঁর জামিন পাওয়ার খবর বিকেলেই জানাজানি হয়। এরপর বিকেল থেকেই কারাগারের বাইরের সড়কে অবস্থান নেন ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। কারও কারও হাতে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল দেখা যায়। বাইরে পুলিশ সদস্যরাও সতর্ক অবস্থায় ছিলেন।
রাত আটটার দিকে কারাগারের ভেতরের প্রধান ফটক থেকে বের হন আবুল কালাম আজাদ। পরে ডিবি পুলিশের সঙ্গে হেঁটে কারাগারের বাইরের প্রধান ফটকের কাছে আসেন তিনি। এরপর বাইরে অপেক্ষমাণ ডিবি পুলিশের একটি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। গাড়িতে তোলার সময় ছাত্রদল, যুবদল ও মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ সময় ডিবি পুলিশের এক সদস্য বলেন, এটা পুলিশের গাড়ি। কালাম পুলিশের গাড়িতে উঠে যাওয়ার পর নেতা-কর্মীরা গাড়িটি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যান। দু-একজন ইটপাটকেলও ছোড়েন। এ সময় গাড়ির বাইরে থাকা পুলিশ সদস্যরা নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দিলে দ্রুত গাড়িটি ডিবি কার্যালয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেলসুপার ও জেলারের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। কারাফটকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কারাগারের একজন ডেপুটি জেলার। তবে তিনি নিজের নাম উল্লেখ করেননি। তিনি জানান, বাগমারা থানার দুটি মামলায় কারাগারে বন্দী ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। উচ্চ আদালত থেকে দুটি মামলায় জামিন পেয়েছেন। আজ জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে তাঁর মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সংসদ সদস্য হওয়ার আগে আবুল কালাম আজাদ বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। মেয়র থাকাকালে ঠিকাদারকে অতিরিক্ত ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬১ টাকা বিল পরিশোধ করার অভিযোগে গত ২১ জানুয়ারি আবুল কালামসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ওই মামলায় আবুল কালামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি বলে জানিয়েছেন কারাগারের ওই ডেপুটি জেলার। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে বাগমারা থানার দুটি মামলায় কারাগারে ছিলেন তিনি। এর বাইরে তাঁর নামে অন্য কোনো মামলা আছে কি না, তাঁদের জানা নেই। অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তার না থাকায় তাঁকে আজ মুক্তি দেওয়া হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হয়েছিলেন আবুল কালাম আজাদ। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তী সময় গত ২ অক্টোবর রাতে র্যাব-৪ ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।