প্রকাশ: বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪, ৯:০৩ অপরাহ্ন
আগের ম্যাচে তাঁর ২১ বলের ইনিংসে কোনো বাউন্ডারি না থাকলেও চারিথ আসালঙ্কা ছক্কা মেরেছিলেন ছয়-ছয়টি। তাতে রানের এমন বল্গা হরিণ ছুটেছিল যে শ্রীলঙ্কা পেরিয়ে যায় ২০০। তাদের ২০৬ রান তাড়ায় ৩ রানে হারার দুঃখ চেপে সিরিজ বাঁচাতে নামা বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারও চড়াও হতে শুরু করেছিলেন শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। কিন্তু একই ওভারে আসালঙ্কার ব্যাটে দুই ছক্কা খাওয়ার পর তাঁকে বোল্ড করে শোধ তোলেন শেখ মেহেদী হাসান।
১৪ বলে তিন ছক্কা ও এক চারে ২৮ রান করে তাই থামতে হয় এই মারকুটে ব্যাটারকে। আগের ম্যাচে ফিফটি করা কুশল মেন্ডিস (২২ বলে ৩৬) ও সাদিরা সামারাবিক্রমাদেরও (১১ বলে ৭) বাংলাদেশের বোলাররা থামান অনেক কমে। সুবাদে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অবাধে রান করা সফরকারীদেরও এবার বশে আনা যায়। ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর আর কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে না হারা বাংলাদেশ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের থামায় দুই শর অনেক কমেই।
নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৬৫ রান। এই ম্যাচে বাংলাদেশের শুরুটাও ছিল দারুণ। নাজমুল হোসেন শান্ত টানা দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে পাঠানোর পর রানের জন্য ছটফট করছিলেন আভিষ্কা ফার্নান্ডো। তা করারই কথা।
কারণ আগের ৬ বলে যে কোনো রানই করতে পারেননি তিনি। শ্রীলঙ্কার এই ওপেনার তাই মুখোমুখি হওয়া সপ্তম বলে চড়াও হতে গেলেন তাসকিন আহমেদের ওপর। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে মিডউইকেট দিয়ে তুলে মারতে চাইলেও ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে অনেক উঁচুতে ক্যাচ উঠে যায়। ফলো থ্রুতে সেই ক্যাচ হাতে জমাতে কোনো সমস্যাই হয়নি বোলার তাসকিনের। প্রথম উইকেট হারানোর সময় স্কোরবোর্ডে লঙ্কানদের রানও মোটে ১।
এর আগে প্রথম ওভার মেডেন দিয়ে শুরু করেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। দুয়ে মিলে সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে বাংলাদেশের এমন শুরুর পর অবশ্য কুশল মেন্ডিস ও কামিন্দু মেন্ডিসের ব্যাটে বিপর্যয় সামলে ওঠার চেষ্টায় গতি ছিল শ্রীলঙ্কারও। পাল্টা আক্রমণেই পথ খুঁজে নিচ্ছিলেন এই দুই ব্যাটার। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতেই তাঁরা স্কোরবোর্ডে জমা করে দেন ১ উইকেটে ৪৯ রান।
ফিফটি পেরিয়ে তাঁদের জুটি যখন স্বাগতিকদের আতঙ্ক বাড়িয়ে চলছিল, তখনই বোলিংয়ে এসে দলকে স্বস্তি দেন সৌম্য সরকার। কুশল মেন্ডিসকে (২২ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৩৬) কট বিহাইন্ড করে ভাঙেন ৪২ বলে ৬৬ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। পরের ওভারেই রান আউটে কাটা পড়েন আরেক সেট ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিসও (২৭ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৭)।
পয়েন্ট থেকে শেখ মেহেদীর থ্রো ধরে স্টাম্প ভাঙেন বোলার রিশাদ হোসেন। দুই মেন্ডিসকে দুই ওভারে হারিয়েই লঙ্কানদের পথ হারানোর শুরু। এরপর আছে মুস্তাফিজুর রহমানের প্রবলভাবে ফিরে আসার গল্পও। নিজের প্রথম ওভারে ১৫ রান দেওয়ার পর অধিনায়ক নাজমুল তাঁকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
তবে ত্রয়োদশ ওভারে আক্রমণে ফিরেই ধরেন শিকার। তাঁর ওভারের দ্বিতীয় বলটি একটু আগেই খেলে ফেলেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। সুবাদে ব্যাটের সামনের দিকে লেগে আসা ফিরতি ক্যাচ নিতে ভুল করেননি মুস্তাফিজও। ততক্ষণে ৭ রান করতে ১১ বল খেলা হয়ে গেছে আগের ম্যাচে ৪৮ বলে ৬১ রানে অপরাজিত থাকা ব্যাটারের।
এরপর আসালঙ্কার বিদায়ে ১১২ রানে ৫ উইকেট হারানো দলে পরিণত লঙ্কানদের টানেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (২১ বলে ৩২*) ও দাশুন শানাকা (১৮ বলে ২০*)। তাই বলে আগের ম্যাচের মতো বাংলাদেশকে বিশাল কোনো লক্ষ্যও দিতে পারেননি তাঁরা। বরং প্রথম টি-টোয়েন্টির খরুচে বাংলাদেশি বোলাররা এবার খুব নিয়ন্ত্রিত। উইকেট না পেলেও শরিফুল ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২০ রান। অথচ আগের ম্যাচে তাঁর ওভারপ্রতি খরচ ছিল ১১.৭৫ রান। তাসকিন ও মেহেদীদের ওভারপিছু খরচও এবার দশের কম।