
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় কিংবা বিকেলের নাস্তায় অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবারটি হলো সমুচা। সমুচা পছন্দ করেন না এমন মানুষ কমই খুঁজে পাওযা যাবে। অফিসের ক্যান্টিনে, ফুটপাতের দোকানে কিংবা কোনো বড় রেস্টুরেন্ট-সবখানেই পাওয়া যায় লোভনীয় খাবারটি।
সমুচা নিয়ে যত মজার তথ্য-
আজ ৫ সেপ্টেম্বর 'বিশ্ব সমুচা দিবস'। প্রতি বছরের এই দিনটি সমুচা লাভারদের জন্য বিশেষ দিন। কেননা দিনটি শুধুই সমুচা খাওয়ার। আপনিও সমুচা খেয়ে দিবসটি পালন করতে পারেন।
সমুচা হলো পেঁয়াজ, আলু, ময়দা, মটর বা অন্যান্য সবজি দিয়ে ভাজা ত্রিকোণাকৃতি খাবার। এটি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিশর, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে খুবই জনপ্রিয়।
ত্রিকোণাকৃতি বলতেই মনে পড়ল পিরামিডের কথা। সমুচার এই যে পিরামিডসদৃশ আকৃতি, এর সঙ্গে কিন্তু সমুচার আদি উৎসের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। দশম শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্যে জন্ম হয় খাবারটির। ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতকে মধ্যপ্রাচ্যের বণিকদের মাধ্যমে এটি আসে ভারতীয় অঞ্চলে।
ন্যাশনাল টুডের তথ্য বলছে, দশম শতাব্দীর গ্যাস্ট্রোনমিক সাহিত্যে সমুচার উল্লেখ পাওয়া যায়। অনেক মধ্যযুগীয় ফার্সি বইয়ে 'সানবোসাগ' উল্লেখ আছে। যা সমুচার প্রাথমিক আকৃতি ও পারস্য পেস্ট্রির কাছাকাছি একটি খাবার।
আবার ঐতিহাসিক বিবরণে 'সাম্বুসাক', 'সাবুসাক', এমনকি 'সানবুসাজ'কে ছোট ছোট কিমা ভরা ত্রিভুজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেগুলো তখনকার ভ্রমণরত বণিকরা ক্যাম্পফায়ারের চারপাশে বসে খেতেন।
এই তথ্য সূত্র অনুসারে, ওই সময় বণিকরা মধ্য এশিয়া থেকে উত্তর আফ্রিকা, পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ায় ভ্রমণ করেছিলেন। তারা যেখানে গিয়েছিলেন সেখানে সমুচাও পৌঁছেছিল।
চতুর্দশ শতাব্দীতে ইবনে বতুতা যখন ভারত সফর করেন, তখন তিনি মুহাম্মদ বিন তুঘলকের দরবারে ভোজসভার একটি খাবারের কথা নথিভুক্ত করেন। সেটি ছিল ত্রিভুজ পেস্ট্রিতে কিমা, মটর, পেস্তা, বাদাম দিয়ে ভরা একটি খাবার।
খুব অল্প সময়েই খাবারটি এতটা জনপ্রিয়তা লাভ করে যে তৎকালীন দিল্লির দরবারে এটি পরিবেশন করা হতো বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। সানবুসাহ, সাম্বোসা, সম্বুসক, সানবাসাস এ রকম নানা রকম উচ্চারণের দিনকাল পেরিয়ে বাংলাদেশে এখন এটি সমুচা নামে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় খাবার।