প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২, ৪:৩৬ অপরাহ্ন

ঢাকা-কিশোরগঞ্জ পথের এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আন্ত:নগর। ঢাকা-আখাউড়া পথের তিতাস কমিউটার ট্রেনটি দ্বিতীয় শ্রেণির মেইল ট্রেন। রেলওয়ের নিয়ম অনুসারে কাছাকাছি থাকলে মেইল ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে আন্ত:নগর ট্রেনকে যেতে দিতে হয়। তবে প্রায় এক মাস যাবত নরসিংদীর জিনারদি থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পর্যন্ত কোনো স্টেশনে এক কাজটি করা যাচ্ছে না।
কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, উল্লেখিত এলাকার মোট সাতটি স্টেশন থেকে যন্ত্র চুরি হয়ে গেছে। ওই যন্ত্রের মাধ্যমে একটি লাইন থেকে আরেকটি লাইনে ট্রেন নিতে সুইচ মুভ করানো হয়। যেটি এক ধরণের মোটর। গত এক মাস ধরে ওইসব মোটর চুরি হচ্ছে বলে লোপ লাইনে ট্রেন প্রবেশ করানো যাচ্ছে না। ফলে প্রত্যেক ট্রেনকেই মেইন লাইন দিয়ে চালাতে হচ্ছে। এতে বিঘ্ন ঘটছে ট্রেন পরিচালনায়। ট্রেন চলাচলে বিলম্ব হচ্ছে বিধায় যাত্রীদেরও দুর্ভোগ বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে মোটরগুলো চুরি হচ্ছে। চোরেরা মোটর খোলে এতে থাকা বিশেষ তার নিয়ে যাচ্ছে। ভৈরব স্টেশনের পর থেকে এসব মোটর চুরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আপ লাইনে (ঢাকামুখী) দৌলতকান্দি, শ্রীনিধি, মেথিকান্দা, হাটুভাঙা, খানাবাড়ি, আমীরগঞ্জ, জিনারদি স্টেশনে প্রবেশ মুখের মোটর চুরি হয়। ডাউন লাইনে (চট্টগ্রাম ও সিলেট) অভিমুখী লাইনের খানাবাড়ি ও আমীরগঞ্জ স্টেশন এলাকার মোটর চুরি হয়ে যায়।
কথা হয় কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে জংশনের উর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী (সংকেত) মো. সোলেমান হোসেনের সঙ্গে। রবিবার বিকেলে তিনি বলেন, ‘ট্রেনকে এক লাইন থেকে আরেক লাইনে নেওয়ার জন্য সুইচ মুভ করাতে যে মোটরের প্রয়োজন হয় সেটি চুরি হয়ে যাচ্ছে। ভৈরব স্টেশনের পর থেকে জিনারদি পর্যন্ত আপ ও ডাউন লাইনের বেশ কয়েকটি মোটর চুরি হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমান অবস্থায় লোপ লাইনে ট্রেন প্রবেশ করানো যাচ্ছে না। প্রায় এক মাস যাবত এসব চুরি হচ্ছে। জিনিসটা খুব বেশি দামী নয়। কিন্তু ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজনীয়। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভৈরব থানায় একাধিক অভিযোগও দায়ের হয়েছে।’
ভৈরব রেলওয়ে জংশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুল হোসেন বলেন, ‘গত দু’দিন আগে আমি যোগদান করেছি। এরই মধ্যে আমীরগঞ্জ এলাকা থেকে যন্ত্র চুরি হওয়ার ঘটনায় দু’টি মামলা হয়েছে। এর আগেরও মামলা আছে। আমরা চেষ্টা করছি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরকে চিহ্নিত করতে। এছাড়া স্টেশন সংশ্লিষ্টসহ এলাকার মানুষকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে আমাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি।
’
দৌলতকান্দি রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শামছুল হক প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রায় এক মাস আগে আমার এখানে একটি মোটর চুরি হয়ে যায়। এরপর এক এক করে বেশ কয়েকটি স্টেশন থেকে মোটর চুরি হয়ে যায়। এ কারণে আপ লাইনে ভৈরব থেকে নরসিংদী পর্যন্ত কোথাও লোপ লাইনে ট্রেন প্রবেশ করানো যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত মোটর লাগানো হয়নি। আরো চুরির শঙ্কায় অন্য মোটরগুলো সংশ্লিষ্টরা খুলে রেখেছেন