প্রকাশ: শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:১৬ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জ ২৫০ বেড জেনারেল হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কর্মকর্তারা আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জ জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মো: মশিউর রহমানের নেতৃত্বে সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়, মো: সোহরাব হোসেন (সোহেল), উপ সহকারী পরিচালক আফছার উদ্দিন ও মো: আল- আমিন হোসেন গোপালগঞ্জ ২৫০ বেড হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানের শুরুতে গোপনে রোগী সেজে হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের ভিডিও ধারণসহ তথ্য সংগ্রহ করে দুদক কর্মকর্তারা। পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের নিকট গোপালগঞ্জ ২৫০ বেড হাসপাতালে বেশ কিছু অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। জরুরী বিভাগে টিকিটের মূল্য বেশী আদায়, বিপুল সংখ্যক রোগী (চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশী) উপস্থিত থাকলেও বিভিন্ন বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসক ও কর্মচারীদের অনুপস্থিত থাকা, কয়েকজন চিকিৎসকের বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, এমআরই ও সিটি স্ক্যান মেশিন দীর্ঘ ৮ -১০ বছর যাবত অচল থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের সেগুলো সচল করতে কার্যকর কোন ভূমিকা পালন না করা, একটি সিন্ডেকেট কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে সিটিস্ক্যান ও এমআরআই মেশিন মেরামত না করে রোগীদেরকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে বাইরের প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে সেবা নিতে বাধ্য করা, এক্স-রে মেশিনের ফিল্ম না থাকার বাহানায় দীর্ঘসময় সাধারণ রোগীদের সেবা থেকে বঞ্চিত করা, স্টোরে কম্বল থাকা সত্ত্বেও রোগীদের মাঝে তা বিতরণ না করা, উৎকোচের বিনিময়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট বাণিজ্য, রোগীদের জন্য ইসিজি মেশিন ব্যবহারে ৪০০–৫০০ টাকা অতিরিক্ত অর্থ আদায়, স্ট্রেচার ব্যবহারকারী রোগীর স্বজনদের নিকট থেকে অর্থ আদায় করাসহ আরও কিছু অনিয়মের প্রমান পাওয়ায় দুদক কর্মকর্তারা হাসপাতালের দায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুদক কর্মকর্তারা দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত হাসপাতালের বেশ কয়েকজনের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে সাংবাদিকদের অবগত করেছেন। বিশেষ করে পুলিশ কেসে ভর্তি হওয়া রোগী বা তার স্বজনদের নিকট থেকে ৫,০০০/- থেকে ৫০,০০০/- টাকা ঘুষ নিয়ে মেডিকেল সনদ বাণিজ্য হচ্ছে মর্মে প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানান দুদক কর্মকর্তারা।
এছাড়া হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় সোহেলকে ১৫ দিনের পর্যবেক্ষণে রাখার পর রিপোর্ট তৈরী সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও নির্দেশনা প্রদান করেন গোপালগঞ্জ জেলা দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: মশিউর রহমান।