জেলার মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজ ইউনিয়নের মাটিয়াব্রীজ বাজারের একটি প্রতিবন্ধী ও যুব নারী উন্নয়ন সংস্থা পৃষ্ঠপোষকতা, অনুদান বা সার্বিক সহায়তার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে চলছে। মাতৃস্নেহ প্রতিবন্ধী ও যুব নারী উন্নয়ন সংস্থা একটি স্কুল ও থেরাপিসহ বিভিন্ন সেবামুলক কাজ পরিচালনা করে। দীর্ঘ চার বছর যাবত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের শিক্ষা, থেরাপিসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা দেয়ার মানসে কাজ করে চলেছে সংস্থাটি।
সংস্থার সভাপতি নাজনীন দৈনিক জবাবদিহিকে বলেন,আমার প্রয়াত স্বামী আতিয়ার রহমান এবং আমি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সেবা প্রদানের জন্য কাজ শুরু করি চার বছর আগে । আমাদের একমাত্র পুত্র সন্তান রয়েছে। সেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু। শুরুটা আমাদের ভালোই ছিল। আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের দরুন স্কুলে ১০৯ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে আমার স্বামী ২০২৩ সালে মারা যান। তার মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। সফলতা প্রাপ্তির আশায় সংগ্রাম চালিয়ে গেছি।
জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের প্রতিবন্ধী চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে মাতৃস্নেহ প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য এ যাবত ১৭টি হুইল চেয়ার প্রদান করেছে। অগ্রনী ব্যাংক বনগ্রাম বাজার শাখা একটি কম্পিউটার দিয়েছে। বর্তমানে কিছু হুইল চেয়ার বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। তাছাড়া ওই সব বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের আনা-নেওয়ার জন্য প্রয়োজন ভ্যান,রিক্সা বা ইজিবাইক। পরিবহন সেবা চালু করা সম্ভব হলে শিশুরা নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে আসতো।
প্রতিবন্ধী শিশুদের বেশির ভাগই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাই শিশুদের নিয়ে শিক্ষা বা সেবা নিতে অভিভাবকরা আসলে তাদের উপার্জনে বা গৃহকর্মে সময় দেয়া সম্ভব হয় না। এসব কারণেই প্রতিবন্ধী শিশুরা শিক্ষা বা সেবা নিতে নিয়মিত আসতে পারেনা।
মাতৃস্নেহ প্রতিবন্ধী ও যুব নারী উন্নয়ন সংস্থায় সাভারের ড্রীম টাচ রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের সিইও এবং পিপিসিল স্পেশাল চাইল্ড স্কুলের প্রিন্সিপাল মো: নাজমুল হক ভারতের তামিলনাড়ুর ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রস্থেটিষ্ট ও অর্থোটিষ্ট প্রফেশনাল মো:শাহ আলমকে নিয়ে সেবামুলক ক্যাম্পেইন করেছেন।
আমি চাই সব বাধা পেরিয়ে একদিন সাফল্য পেতে। আমার সেবা নিয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা একদিন পাল্টে দেবে সমাজ। জাতির সহায়ক শক্তিতে পরিনত হবে প্রতিবন্ধী শিশুরা এটাই আমার কামনা। আমি স্বপ্ন দেখি প্রতিবন্ধী শিশুরাও একদিন দেখিয়ে দেবে দুনিয়াকে।
শিক্ষার্থী আরাফাতের মা লিপি বেগম( ৪২),দ্বীন ইসলামের মা দোলনা খানম বলেন, মাতৃস্নেহ প্রতিবন্ধী ও যুব নারী উন্নয়ন সংস্থায় আমার ছেলে ভর্তি হওয়ার পর আমি অনেক আশাবাদী। নাজনীন ম্যাডাম শিশুদের জন্য অনেক পরিশ্রম করেন।
কামনা করি নাজনীন তার চেষ্টার মাধ্যমে এলাকার প্রতিবন্ধী শিশুদের ভাগ্য যেনো বদলে দিতে পারে।
গোপালগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ডিডি মো: হারুনর রশীদ বলেন,আমি সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো মাতৃস্নেহ প্রতিবন্ধী ও যুব নারী উন্নয়ন সংস্থায়।
মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আজিজুর রহমান বলেন,মাতৃস্নেহ প্রতিবন্ধী ও যুব নারী উন্নয়ন সংস্থার শিক্ষার্থীদের পরিবহন সমস্যা নিরসনে এবং কিছু হুইল চেয়ার প্রদানে আমি বিশেষভাবে সচেষ্ট থাকবো।