শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ৮ কার্তিক ১৪৩১
 

জানা গেলো শেখ হাসিনার অবস্থান    এ বছর সরকারি অর্থে কেউ হজে যাবে না    ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০২৯    দক্ষিণ কোরিয়ায় ইসরায়েলি দূতাবাসে হামলা    ডিবি হারুন ও তার স্ত্রীসহ ১২ জনকে দুদকে তলব    সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ, ২৬ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার     ঢাকা থেকে ৫ রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা   
নায়ক মান্নার ভিজিটিং কার্ড যেমন ছিল
প্রকাশ: বুধবার, ২০ মার্চ, ২০২৪, ৯:০১ অপরাহ্ন

বলা হয়ে থাকে তিনি গণমানুষের নায়ক। চলচ্চিত্রের মেগাস্টার। কারণও আছে। চলচ্চিত্রের দুর্দিনে অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। দুই যুগেরও বেশি সময় বাংলা সিনেমায় দাপিয়ে বেড়ানো এই নায়কের পুরো নাম সৈয়দ মোহাম্মদ আসলাম তালুকদার। 

তবে তাকে সবাই চিনত ‘মান্না’ নামেই। চলচ্চিত্রে পা রাখার পর থেকে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি। অভিনয়ে যেমন সেরা হয়েছেন, তেমনি ছিলেন সবার প্রিয়।

ওই সময় দেশের নানা প্রান্তে শুটিং ও প্রচারণার জন্য ঘুরে বেড়িয়েছেন। গিয়েছেন ভক্তদের কাছাকাছি। এ কারণেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন সব বয়সীদের প্রিয় নায়ক। স্বাভাবিকভাবে ওই সময় নায়ক মান্না ব্যবহার করেছেন ভিজিটিং কার্ড বা পরিদর্শন কার্ড।

কেমন ছিল নায়ক মান্নার ভিজিটিং কার্ড?  এর মধ্যে একটি কার্ডে দেখা যাচ্ছে মান্নার পুরো নাম লেখা―এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। পদবি হিসেবে আছে মুভি স্টার, প্রডিউসার, ডিস্ট্রিবিউটর জেনারেল সেক্রেটারি। ওই সময় নায়ক মান্না বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতেন।

ঠিকানা হিসেবে আছে কাকরাইলের ঠিকানা। ৯ ডিজিটের একটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া আছে সেই কার্ডে। ধারণা করা হয়, ২০০৮ সালে মারা যাওয়ার আগের সময়ের ভিজিটিং কার্ড এটি।

মুহিব আল হাসান জানান, কার্ডটি তিনি মান্নার কাছ থেকে নিয়েছিলেন রংপুরে। ২০০৮ সালে শুরুর দিকে মান্না একটা গানের শুটিং করতে রংপুরের একটি পিকনিক স্পটে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা গিয়েছিলেন পিকনিক করতে। তাই প্রিয় নায়কের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ায় তাঁর কার্ডটি চেয়ে নিয়েছিলেন।

এ ছাড়া মান্নার আরো একটি কার্ড মুহিব পেয়েছেন তাঁর এক আত্মীয়র কাছে। হালকা ধূসর রঙের এই কার্ডটি মান্নার ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি সময়ের হতে পারে। যে কার্ডে নায়ক শুধুই তাঁর নাম দিয়েছেন ‘মান্না’। নামের নিচেই আছে তাঁর পদবি মুভি স্টার এবং ফিল্ম প্রডিউসার। 

কার্ডের এক পাশে আছে তাঁর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কৃতাঞ্জলী কথাচিত্রের নাম ও ঠিকানা এবং আরেক পাশে তাঁর ফোন নম্বর। মোবাইল নম্বর হিসেবে দেওয়া আছে দেশের প্রথম মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সিটিসেলের নম্বর।

ক্ষণজন্মা এই নায়ক ১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। টাঙ্গাইলে মাধ্যমিক পাস করে মান্না চলে আসেন ঢাকায়। 

ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। এখানে পড়াকালীন একদিন বলাকা সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে যান। গিয়ে সেখানে দেখতে পান, একটি লিফলেট। যাতে লেখা, এফডিসি থেকে ‘নতুন মুখ খোঁজা হচ্ছে’।

মান্না সেই আয়োজনে নাম নিবন্ধন করে অংশ নেন এবং বিচারকদের মন জয় করে টিকেও যান। তবে সিনেমার কাজ পেতে তাঁকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। পরিচালক-প্রযোজকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। এফডিসির এ গলি ও গলিতে পড়ে থাকতেন।

তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’; কিন্তু প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘পাগলী’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমার মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন মান্না।

কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমা দিয়ে মান্না হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের নির্ভরযোগ্য নাম। মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’ ছবিগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মান্নার অবস্থান শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাড়ে তিন শর বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন মান্না। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘দাঙ্গা’, ‘কাসেম মালার প্রেম’, ‘আম্মাজান’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’, ‘কষ্ট’, ‘লাল বাদশা’, ‘বীর সৈনিক’, ‘অবুঝ শিশু’, ‘সাজঘর’, ‘উত্তরের খেপ’, ‘কাবুলিওয়ালা’ ইত্যাদি। 

সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি মান্না প্রযোজনাও করেছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম কৃতাঞ্জলী চলচ্চিত্র। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে তিনি ‘লুটতরাজ’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘পিতা মাতার আমানত’সহ আটটি সিনেমা প্রযোজনা করেছিলেন। যার সবকটিই সুপারহিট হয়।

২০০৩ সালে ‘বীর সৈনিক’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে মান্না জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও অনেক বেসরকারি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন মান্না।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft