প্রকাশ: বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৫:৩৭ অপরাহ্ন
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাই কমিশনার এইচ.ই. লিলি নিকোলাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, কানাডায় বেশি বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যাদের ভালো চিকিৎসার জন্য কানাডায় দক্ষ নার্স, চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট দরকার। তাই বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজন সংখ্যক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কানাডা হাইকমিশনার এইচ.ই. লিলি নিকোলাস।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজন সংখ্যক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কানাডা হাইকমিশন। তবে এসব নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ হতে হবে। এর জন্য কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে একটি উন্নত ও বিশ্ব মানের নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কানাডা হাইকমিশনার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় কানাডা হাই কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশে এই মুহুর্তে ৯৫ হাজার শিক্ষিত নার্স আছে যারা বিশ্বের যেকোনো দেশের স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে তাদেরকে আরও বেশি দক্ষ ও বিশ্বমানের করতে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এজন্য দক্ষ প্রশিক্ষকও দরকার হবে আমাদের। এক্ষেত্রে কানাডা সরকার বাংলাদেশে যে উন্নতমানের টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও নার্সিং পেশাকে যুগোপযোগী করতে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের উদ্যোগের পাশাপাশি কানাডা সরকারের সহায়তা পেলে বাংলাদেশের নার্সিং সেক্টরকে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে।
আলোচনায় কানাডা হাইকমিশনার বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশেষ করে বেসরকারি মেডিকেলে অধিক সংখ্যক সিজারিয়ান শিশু জন্ম নেয় বলে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করা, গ্রামের মেয়েদের স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য করা প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বর্তমানে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
একইসঙ্গে, দেশের প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গ্রামে থাকা মেয়েদেরকে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদানসহ গ্রামীণ মায়েদের জন্য ইন্সটিটিউশনাল ডেলিভারি সিস্টেম সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
স্বাস্থ্যখাতে বাজেট মাত্র ১ শতাংশ এবং কানাডার স্বাস্থ্যখাতে বাজেট ১২ শতাংশ। বাংলাদেশ এত কম বাজেটে এত বিরাট সংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারবে কি না এবং ভবিষ্যতে কানাডা সরকারের কোন ধরনের সহায়তা লাগবে কি না সে ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান কানাডা হাইকমিশনার।
এ বিষয়ে আরও কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়ে আরেকবার বৈঠকে বসবার আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কানাডা হাইকমিশনার ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী উভয়েই পরবর্তীতে আরও একবার সাক্ষাতের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন।