প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৫:৩৩ অপরাহ্ন

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, তিন ফসলি জমিতে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অনুমোদন নিতে হবে। তিন ফসলি জমি সরকার নষ্ট করতে দেবে না। এরইমধ্যে পরিপত্র জারি করে সেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ পালনে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক আলোচনা সভা ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালযয়ের সভাকক্ষে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়।
তাজুল বলেন, ‘তিন ফসলি জমি আমরা নষ্ট করতেই দেব না। তবে গ্রামেও যাতে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মাণ করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। শহরে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে সিটি করপোরেশন ও রাজউক থেকে অনুমোদন নিতে হয়। তেমনি পৌরসভা এলাকায় অনুমতির দরকার পড়ে। গ্রামেও তিন ফসলি জমিতে অবকাঠামো নির্মাণে ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদন লাগবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যদিও সেখানে (ইউনিয়ন পরিষদ) গেলে হয়রানির শিকার হতে হয়। এ ছাড়াও যোগ্য প্রকৌশলী নেই। এমন বিভিন্ন অভিযোগ জনগণের আছে, যা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। কাজ করতে গেলে কিছু চ্যালেঞ্জ আসবেই। সবার সহযোগিতায় তা মোকাবিলা করতে হবে।’
স্থানীয় সরকার দিবস পালনে কোনো তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জাতীয়ভাবে স্থানীয় সরকার দিবস উদ্যাপনে ২৫ সেপ্টেম্বরের কথা বলা হয়েছে। তবে এ দিনট পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। যে কারণে এখন নিশ্চিত করে বলছি না। এটিকে ‘খ’ শ্রেণির দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এ দিবসে সরকারি ছুটি থাকবে না। ‘ক’ শ্রেণির দিবসগুলোতে সরকারি ছুটি থাকে।
জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হবে বলে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটি খসড়া গাইডলাইনও তৈরি করেছি। যেহেতু আমরা দিবসটি পালনে মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছি, সেহেতু আমরা গাইডলাইনটি চূড়ান্ত করব। এর মধ্যদিয়ে আমরা যোগাযোগ ও উন্নয়নে বড় ধরনের রূপান্তর করতে পারব। জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস হিসেবে আমাদের প্রথম প্রস্তাব ছিল ১৬ জানুয়ারি। কিন্তু আগামী বছর জানুয়ারি মাসে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাজেই আমরা একটি দিবস ঘোষণার পর নির্বাচনের কারণে যদি প্রথমবার পালন করতে না পারি, তাহলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যে কারণে দিবসটি সেপ্টেম্বর মাসে নিয়ে আসার জন্য প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করতে পারব।’
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে দিবসটি পালনের নির্দেশনা থাকবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে কাউন্সিলরদেরও নির্দেশনা দেয়া থাকবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখা এবং জনমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে এ দিবসটি পালন করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, অধিকতর জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক এবং আর্থিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথ সুগম হবে। দিবস পালন করলে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর যে সব অংশীজন বা সুবিধাভোগী রয়েছেন, তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সহজতর হবে এবং কার্যক্রমে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর ফলে সেবা সহজীকরণে সহায়ক হবে। সার্বিকভাবে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস' পালনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণের সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে। এতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা, কর্মতৎপরতা, গুরুত্ব ও সর্বোপরি সক্ষমতা প্রকাশ পাবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ব্যাপ্তি ইউনিয়ন পরিষদের গন্ডি পেরিয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার দিবস উদ্যাপনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি এবং জনগণের সম্পৃক্তার প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমান সরকার সেবা সহজীকরণ এবং জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।
-জ/অ