বুধবার ৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২৪ পৌষ ১৪৩১
 

ধেয়ে আসছে শৈত্যপ্রবাহ    শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল    প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের একান্ত বৈঠক     বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া    খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রার প্রস্তুতি, নিরাপত্তা জোরদার    কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা    পরিবারসহ নাফিজ সারাফতের ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ   
ইউটিউব দেখে মুড়ি ভাজার কারখানায় সফল গৃহবধূ এ্যানি বেগম
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩:৫৬ অপরাহ্ন

রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া যদু ফকীর পাড়ার বাসিন্দা এ্যানি বেগম। এইচএসসি পাস করার পর অর্থের অভাবে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মুক্তার ফকীরের সাথে। স্বামীর সংসারেও অভাব অনটন। এর মধ্যে স্বামীর হঠাৎ অসুস্থ্যতায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরে এ্যানির মাথায়। অসুস্থ্য স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন এ্যানি বেগম।

এভাবে বেশি দিন ঘরে বসে থাকেনি এ্যানি। কর্মের সন্ধ্যানে ঘর থেকে বের হন। গোয়ালন্দ উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়ীতে বসে কাজ করেন। পরিবারের অভাব কিছুটা নিরসন হয়। তবে সেই জায়গায় থেমে নেই তিনি। স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ইউটিউব দেখে শেখেন মুড়ি ভাজা। পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপ করে প্রথমে একটি মেশিন, একটি ঘর ও কিছু আমানত সংগ্রহ করেন। তারপর আত্নীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, স্থানীয় এনজিও থেকে টাকা ঋণ সংগ্রহ করে মুড়ি ভাজা শুরু করেন। স্বামী এবং শ্বশুর-শ্বাশুরী নিয়ে ধীরে ধীরে শুরু করেন মুড়ি ভাজা। তারপর বাজারজাত। এভাবে চলতে থাকে এ্যানি’র সংগ্রামী জীবন। মুড়ি বাজারজাত করার পর থেকে তাকে  আর পিছনের দিকে তাকাতে হয়নি।

এ্যানি আক্তার বলেন, করুনা নয়। কর্মের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে চাই। লজ্জা করে ঘরে বসে থাকলে কেউ খাওয়াতে আসবে না। তাই অভাব অনটন ও দারিদ্রতাকে দুর্বলতা না ভেবে বরং পুঁজি গুছিয়ে কাজ শুরু করেছি। প্রথমে অনেক বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি। অনেকেই বলতে শুনেছি নারীরা ঘরে থাকবে। সে কেন ঘর থেকে বের হবে। না, আমি পারি নাই। 
ক্ষুদার যন্ত্রনায় ঘরে বসে থাকতে পারি নাই। তাই  মানুষের কথা কান না দিয়ে নিজের আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছি।

এ্যানি বেগম আরো বলেন, এখন আমি সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত নিজের কর্মস্থানে কাজ করি। আমার কাজের সঙ্গী স্বামী ও শ্বাশুরী। পাশাপাশি আরোও দুই কর্মচারী রয়েছে। মোট ৫জন কাজ করি। 

নারী উদ্যোক্তা এ্যানি বলেন, এই মুড়ি স্বাস্থ্য সম্মত। মাটির চুলায় ভাজা হয়। তবে একটি মেশিন শুধু মটরে ঘুরে। এতে চাউল গরম করতে হয়। এরপর গ্রামীণ পদ্ধিতিতে মাটির চুলাই লবণ মিশিয়ে মুড়ি ভাজা হয়। কোন প্রকার কেমিক্যাল মেশানো হয় না। বাজারে চাহিদাও অনেক।

এ্যানি আরো বলেন, এখন প্রতিদিন ৩ থেকে ৪'শত কেজি মুড়ি ভাজতে পারি। বাজারজাতও করি। বড় পরিসরে করার ইচ্ছা আছে। ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে টাকা নিতে পারলে ব্যবসা করা সম্ভব হতো। কিন্ত যেখানে চাই, সেখানে কঠিন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সুতরাং ব্যাংক লোন নিতে পারি না। তবে আমি হতাশা নই। আমি আশাবাদী।

প্রতিবেশি আক্কাস মোল্লা বলেন, গৃহবধূ এ্যানি এখন তাদের সংসাদের দায়িত্ব কাধে তুলে নিয়েছেন। তিনি একজন সংগ্রামী নারী।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, মুক্তারের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। বিয়ের কিছু দিন পর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। কিন্ত ওর স্ত্রী এ্যানি কারো সহযোগিতা না নিয়ে কাজ শুরু করেন। এখন মুড়ি ভাজার কারখানা দিয়ে অনেক ভাল আছেন। ওর সাহসিকতা দেখে এখন অনেকে এগিয়ে আসছে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: jobabdihimedia@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft