প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:০৭ অপরাহ্ন
১০ বছর পূর্বেও যার ছিলো না ১ লাখ টাকা, আজ সে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। দেশে নামে-বেনামে কিনেছেন প্রায় ২’শ কোটি টাকার সম্পত্তি। বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমিসহ সম্পদ করেছেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে দুই শত কোটি টাকা পাচার করেছেন এবং সে টাকায় দুবাই ও মালয়েশিয়ায় কিনেছেন বাড়ি-ফ্ল্যাট ও দিয়েছেন ব্যবসা।
এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর থানার দৌলতপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মালয়েশিয়ার ভিসা সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা কমফোর্ট ওভারসিজের মেহেদী হাসানসহ ১০৩ জনের নামে পল্টন থানায় (মামলা নং-৬, তারিখ: ০৩/০৯/২০২৪ইং) একটি মামলা করেছে এক ভুক্তভোগী। পুলিশ ও যৌথবাহিনী এই মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন বলে জানা যায়।
অভিযোগে জানা যায়, যুবলীগের ক্যাডার রাজনীতি করার সুযোগে নিজ এলাকার মানুষ ও নিজের অফিসের বিদেশগামীদের টাকা ফেরত না দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিতেন। তার পালিত মাস্তান শ্রেণীর লোকজন দিয়ে মানুষকে অপমান অপদস্থ ও মারধর করে অফিস থেকে তাড়িয়ে দিতেন।
অভিযোগে আরও জানা যায়, গরীব পরিবার সন্তান মেহেদী হাসান অভাবের তাড়নায় ঢাকায় এক বন্ধুর সহযোগিতায় পুরানো পল্টন এলাকায় ১ রুমের একটি অফিস রুম সাবলেট নিয়ে বায়তুল মোকাররম স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসার। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান আপনি স্বর্ণ এনে পৌঁছে দিলে টাকা পাবেন, মেহেদী তাদের কাছে কিছু টাকা এডভান্স চান কারণ তার কাছে পুঁজি নেই।
ব্যবসায়ীরা এডভান্স দিতে অস্বীকৃতি জানান, বিপাকে পড়ে যায় মেহেদী। শুরু করেন নতুন কৌশলে টাকা ইনকামের। জড়িয়ে পড়েন মালয়েশিয়ায় বডি কন্ট্রাক্ট মানুষ পাচারের। বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশনের লোকদের ম্যানেজ করে বডি কন্ট্রাক্টে বহু সংখ্যক মানুষকে মালয়েশিয়া ও দুবাই পাঠিয়ে কয়েক কোটি টাকার মালিক হন মেহেদী। কমফোর্ট ওভারসিজ কনসালটেন্ট লিমিটেড নামে নিজের নামে করেন রিক্রুটিং লাইসেন্স (যার নং -১৭৩৯, ঠিকানা:২৪/এ , ৯ ম তলা, বিজয়নগর, ঢাকা)। পুঁজি হওয়ায় পুরোদমে শুরু করেন স্বর্ণ চোরাচালান, লাগেজ ব্যবসা ও মালয়েশিয়া-দুবাইতে বডি কন্ট্রাক্টে অবৈধ লোক পাঠানো। এরই মাঝে মালয়েশিয়ার ভিসা বাজার খুললে মেহেদী হাসান অবৈধ জুলুমবাজ রুহুল আমিন স্বপন সিন্ডিকেটে জড়িয়ে প্রায় পাঁচ’শ কোটি টাকার মালিক হয়ে যান। যার বেশিরভাগ টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মেহেদী হাসানের অর্থ পাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে বলে জানা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ পদক্ষেপের কারণে পাচার করা অর্থ দেশে আসবে এবং মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করে এই সরকার ন্যায় বিচার করবে বলে ভূক্তভোগী মানুষ বিশ্বাস করেন।