বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ৮ কার্তিক ১৪৩১
 

দেশের অধিকাংশ জায়গায় টানা বৃষ্টি হতে পারে    ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার    রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে আলোচনা হচ্ছে: তথ্য উপদেষ্টা    ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৭ জনের, হাসপাতালে ১,১৩৮    ৪৭তম বিসিএসে ৩৪৬০ শূন্যপদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আবেদন    চলতি অর্থবছরে জিডিপি কমার পূর্বাভাস আইএমএফের    সচিবালয়ে ঢুকে পড়া ৫৩ শিক্ষার্থী আটক    
স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি নিহত পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর
খুলনা প্রতিনিধি:
প্রকাশ: শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪, ৬:৫৯ অপরাহ্ন

খুলনায় কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা সুশীল ঘরামীও শোকে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। মা গীতা রানীও পাগলপ্রায়। ছয় বছর বয়সী স্নিগ্ধা বারবার খুঁজছে তার বাবা সুমন ঘরামীকে; কোনো সান্ত্বনাতেই থামছে না সুমনের স্ত্রীর কান্না। পুলিশ কর্মকর্তা, আত্মীয়-স্বজন যাকেই পাচ্ছেন তার কাছেই স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামীর স্ত্রীর কান্না।

নিহত পুলিশ সদস্য সুমনের বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কিসমত মালিপাটন গ্রামে। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি ভাড়া থাকতেন খুলনা নগরীর বয়রা এলাকায়।

গতকাল শুক্রবার রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আহাজারি করছেন। তার আহাজারি দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারছেন না আত্মীয়-স্বজন ও পুলিশ সদস্যরা।

রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক ও খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মঈনুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে তাকে সান্ত্বনা দেন। কিন্তু কোনো সান্ত্বনাতেই শান্ত হতে পারেননি মিতু।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, সুমন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় আন্দোলনকারীদের পিটুনিতে নিহত হন তিনি।

সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাস বলেন, গল্লামারী কাঁচাবাজারে সুমন এবং তিনি একসঙ্গে ছিলেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে তারা দলছুট হয়ে যান। প্রাণ বাঁচাতে তিনি ইউনিফর্ম খুলে প্রায় চার ঘণ্টা ড্রেনের মধ্যে ছিলেন। এর কোনো এক সময় আন্দোলনকারীরা কনস্টেবল সুমনকে নৃংশসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচি পালন করতে মিছিল নিয়ে শিববাড়ী থেকে সোনাডাঙ্গা থানা মোড় হয়ে গল্লামারী আসেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দেখা যায়।

বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি দল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে অবস্থান করে। আরেকটি দল জিরো পয়েন্টের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ মিছিল লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এরপর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।

এ সময় পুলিশ সাঁজোয়া যান নিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে এগোতে বাধা দেয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে পুলিশ পিছু হটে। এ সময় শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে গল্লামারী সেতুর ওপর অবস্থান নেয়।

পুলিশ গল্লামারী মোড় থেকে দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা চালায়।

পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল বলেন, “সংঘর্ষ চলাকালে আন্দোলনকারীরা কনস্টেবল সুমনকে বেধড়ক মারপিট করে। আহত অবস্থায় খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

কমিশনার বলে, আন্দোলনকারীদের হামলায় অন্তত আরও ৩০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২-৩ জনের অবস্থা গুরুতর। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতেও আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।

অন্যদিকে পুলিশের হামলায় অন্তত ৫০জন আহতসহ ৯জন গুলিবিদ্ধ হন বলে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft