বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ৮ কার্তিক ১৪৩১
 

দেশের অধিকাংশ জায়গায় টানা বৃষ্টি হতে পারে    ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার    রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে আলোচনা হচ্ছে: তথ্য উপদেষ্টা    ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৭ জনের, হাসপাতালে ১,১৩৮    ৪৭তম বিসিএসে ৩৪৬০ শূন্যপদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আবেদন    চলতি অর্থবছরে জিডিপি কমার পূর্বাভাস আইএমএফের    সচিবালয়ে ঢুকে পড়া ৫৩ শিক্ষার্থী আটক    
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের কটেজ জোন হয়ে উঠেছে পতিতা বাজার
আজাদ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪, ৮:৫০ অপরাহ্ন

কক্সবাজার  পৌর শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের কটেজগুলো ‘পাপের স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত হয়েছে। এসব এলাকা মুলত পতিতাদের এবং পতিতা দালালের দখলে চলে যাচ্ছে। সাইনবোর্ডধারী হোটেলের আড়ালে এখানে চলে রমরমা মাদকবাণিজ্য। ‘ওপেন সিক্রেট’ চলছে ইয়াবা ও পতিতার হাট। হাত বাড়ালেই মেলে মাদক, হাত বাড়ালে মেলে সুন্দরী নারী। সকাল-সন্ধ্যা কটেজ জোনের বিভিন্ন সড়কে বিচরণ অপরাধীদের।
 
বিশেষ করে রাত ৮ টার পর থেকে চলে রমরমা দেহ ব্যবসা। যেন শহরের কটেজ জোন একটি পতিতাবাজার। এসব কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছে হোটেল মালিক মোঃআসিফ, মোঃ লোকমান এবং মোঃ শাহিন। তাছাড়া পতিতা-খদ্দের খোঁজে ব্যবহার করা হচ্ছে কিশোর গ্যাং সদস্যদের। কমিশন ভিত্তিতে পতিতা ও মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে কিছু রিক্সা ও সিএনজি চালক। নিরাপদ এলাকা হিসাবে মাঝারী থেকে বড় মাপের ব্যক্তিরাও কটেজ জোনে গিয়ে তাদের আকাম-কুকাম সারছে প্রতিনিয়ত। তবে এদের কোন ভয় নেই। কক্সবাজারের এস পি সার্কেল অভিযান চালায় গত ১০/০৬/২০২৪ ইংরেজি সোমবার রাত ১০ টার দিকে। অভিযানের খবরটি আগে জানতে পারাতেই পতিতা ব্যাবসায়ীরা গা ঢাকা দেয়।  কিছু অসৎ পুলিশের পতিতা দালাদের আগাম সংবাদ দেয়। ফলে কটেজ জোন পতিতা শূন্য হয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে  পর্যটন নগরীরর কটেজ জোন অপরাধ ও অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।

স্থানীয় সূত্রের দাবী, এক সময় দিনের বেলায় হলেও এখন দিন রাত ২৪ ঘন্টাই চলছে কটেজ জোনের অপকর্ম। হাত বাড়ালেই মিলছে বিভিন্ন দামের পতিতা ও নেশাজাতদ্রব্য। এসব কাজে জড়িত রয়েছে স্থানীয় কিছু বড় মাপের লোক। প্রতিদিন অপরাধ করেও রহস্যজনক কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। কটেজগুলোর নিয়ন্ত্রক সংগঠক থাকলেও অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা তারা। এ কারণে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন নগরীর কটেজ জোন ‘পাপের স্বর্গ রাজ্য’-তে পরিণত হয়েছে।

অভিযোগ ওঠেছে, এই কটেজ জোনের বেশি ভাগই ব্যবসায়ী এখন পর্যটন ব্যবসা ছেড়ে পতিতার ব্যবসার দিকে ঝুকেছে । প্রতি রাতে পতিতার ঢল নামে এখানে। পতিতা ব্যবসাকে দেহ শিল্পে রুপ দিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট । সিএনজি-রিক্সা চালকদের সাথে মোবাইল নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে চলে এ ব্যবসা। তবে এবার নতুন করে পর্যটন মৌসুমে টার্গেটে নেমেছে কিছু অসাধু কটেজ মালিক ও কর্মচারী। তাদের টার্গেট রোহিঙ্গা পতিতা সংগ্রহ করে কটেজ ও হোটেল পরিচালনা করা।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে, ইয়াবা ও পতিতা ব্যবসার সাথে জড়িত বেশ কয়েকটি কটেজের নাম। যারা কৌশলে চালাচ্ছে এসব অপকর্ম।

সরেজমিন গিয়ে পর্যটক সেজে কথা হয় কটেজ জোনের বেশ কয়েকজন কর্মচারীর সাথে। পর্যটক পরিচয় দেয়ায় এগিয়ে আসে এক কর্মচারী। দেখা মিলে দরজার ভেতরে পতিতা। বাইরে চেয়ার নিয়ে বসে আছে কর্মচারী। গেইটে যাওয়া মাত্রই বলেন প্রতিটা রুমে রয়েছে সুন্দরী নারী। আপনাদের যেটা পছন্দ সেটা নিতে পারবেন। এর আগে টাকা এবং কথা ফাইনাল করে যেতে হবে কিন্তু।

এছাড়া হোটেল মোটেল জোনে ও কটেজে রোহিঙ্গা পতিতার আনাগোনা বেড়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান-কটেজ জোন এখন পতিতার জোন বললে চলে। পাপের ঘাটি হিসেবে এখন একটাই পরিচয় কটেজ জোনে।

জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি হারে পতিতা ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে কটেজ জোনে। এই কটেজের মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় অসাধু কর্মকর্তা ও দালালদের তত্ত্বাবধানে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। পতিতাদেরকে মাসিক এবং দৈনিক ভাড়ার মাধ্যমে রুমে স্টক রেখে গণহারে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।

সুত্র জানায়, এসব কটেজে প্রতিদিনই রোহিঙ্গা এনে দেহ ব্যবসায় সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। রেজিস্ট্রার খাতায় অতিথিদের নাম-ঠিকানা লিখার নিয়ম থাকলেও তা মানছে না কেউ। বেপরোয়া ভাড়া বানিজ্য চলে কটেজগুলোতে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যে আরো উঠে আসে অপরাধে সংশ্লিষ্ট অনেকের নাম। কলাতলীর পুরো কটেজ জোনে এদের নেতৃত্বে গড়ে উঠে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট শুধুমাত্র পতিতা ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। মাদকদ্রব্য, চোরাচালান, ইয়াবা সেবনসহ নানা অপকর্ম তারা নিয়ন্ত্রণ করে। পর্যটক ছিনতাইয়ের সাথেও এরা জড়িত। তাদের সাথে জড়িত রয়েছে কিছু টোকাই শ্রেনীর লোকজনও। তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পরিচ্ছন্ন অনেক কটেজ ব্যবসায়ী। স্থানীয় সাধারণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কটেজ জোনে মূলত দালাল মোঃ আসিফ-মোঃলোকমান -মোঃশাহিন সহ আরো অনেকেই। তাদের হাত ধরে অনেকেই পতিতা জগতে পা রেখেছে। সংসার নষ্ট হচ্ছে উঠতি বয়সী যুবক-যুবতির। পতিতাবৃত্তির কষাঘাতে অকালে ঝরে পড়ছে অনেক মেয়ের প্রাণ।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল জনাব মোঃ মিজানুর রহমান (বিপিএম) বলেন, কটেজ জোনে অপরাধের বিষয়ে  অভিযোগ আসলেই আমারা অভিযান চালায়। আমাদের যাওয়ার খবরটা তারা টের পেয়ে পতিতাদের সরিয়ে ফেলেন। আগে অনেক বার ধরা পড়েছে অনেক পতিতা। সাজাও হয়েছে তাদের। শীঘ্রই অভিযুক্ত কটেজগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft