
আজ বুধবার বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, পহেলা বৈশাখের রাতে গুলশান-২ নম্বরের ক্যাফে সেলেব্রিটা বারের সামনে মদ খেয়ে কয়েকজন তরুণী মিলে এক নারীকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় মামলা হলে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তার তরুণীরা হলেন- শারমিন আক্তার মিম (২৪), ফাহিমা ইসলাম তুরিন (২৬) ও নুসরাত আফরিন।
ডিবি বলছে, মারামারির ঘটনায় গ্রেপ্তার তরুণীদের মদপানের লাইসেন্স ছিল না। তারা অবৈধভাবে অতিরিক্ত মদ পান করে মাতাল হয়ে মারামারিতে জড়ান। সেলেব্রিটা বার তাদের কাছে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করায় বারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিবি প্রধান হারুন বলেন, এই নগরে বাস করতে হলে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। মদ পানের জন্য কোনও পুরুষ বা নারীর লাইসেন্স থাকলে তারা বৈধ লাইন্স বার থেকে মদ পান করতে পারেন। এতে আইনি কোনও বাধা নেই। কিন্তু পহেলা বৈশাখের রাতে গুলশানের মতো এলাকায় তারা মদ পান করেছেন। কারও কোনও লাইসেন্স ছিল না। লাইসেন্সবিহীন কারও কাছে বার কর্তৃপক্ষ মদ বিক্রি করতে পারে না। তাদের উচিত ছিল এসব নারীর মদপানের লাইসেন্স পরীক্ষা করা।
এমনকি এই নারীদের কাছে অতিরিক্ত পরিমাণে মদ বিক্রি করেছে, যা পান করে মাতাল, বেসামাল হয়ে গেছে তারা। বারের লোকজনের উচিত ছিল বেসামাল নারীদের নিয়ন্ত্রণ করা। তারা বার থেকে বের হয়ে রাস্তায় প্রকাশ্যে মারামারিতে জড়ালো, যা গুলশানের বাসিন্দারা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছে।
মহানগর গোয়েন্দা প্রধান আরও বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এই ভিডিও দেখে ভাববে, শহরের রাস্তায় নারীরা মাতলামি করে, মারামারি করে। এটা কোনও অভিভাবকই মেনে নিতে পারবেন না। এসব নারী কারও না কারও সন্তান। তাদের অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, কী করে খেয়াল রাখা। আজ এই নারীরা বারে গিয়ে মদ পান করে এমন কার্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। যে নারীকে তারা মেরেছে, সেই নারীও মাতাল ছিলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে বারগুলো লাইসেন্স ছাড়া মদ বিক্রি করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেবো।
ভুক্তভোগী নারী রিতা আক্তার সুস্মি বলেন, আমি ও আমার এক বন্ধু মিলে খাবার খেতে ওই রেস্তোঁরায় যাই। খাওয়ার এক পর্যায়ে টয়লেটে যাওয়ার জন্য গিয়ে দেখি চারজন মেয়ে এক সঙ্গে টয়েলেটে প্রবেশ করেছে। বিষয়টি রেস্তোরাঁর ম্যানেজারকে বলি। তারা মেয়েদের বের করে দেয়। পরে আমি রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়ার সময় তারা আমার ওপর হামলা করে।
সুস্মি আরও বলেন, আমাকে চড়-থাপ্পড় দিতে পারতো। কিন্তু রাস্তার মধ্যে তারা আমার কাপড় খুলে ফেলে, আমাকে মারধর করে। আমি তাদের সঠিক বিচার চাই। কারণ রাস্তায় একজন মেয়ে হয়ে আরেকজন মেয়ের কাপড় খুলে ফেলতে পারে না।