টস হেরে ব্যাট করতে নেমে জেমস নিশামের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ পায় রংপুর রাইডার্স। কিন্তু তারকা নির্ভর রাইডার্সদের প্রথম কোয়ালিফায়ারে পাত্তাই দিলো না কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। লিটনের ক্যাপ্টেন্স নক ও তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাট জয় এনে দিয়েছে কুমিল্লাকে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৮৫ রানের লক্ষ্যে সহজেই পৌঁছে যায় ভিক্টোরিয়ান্সরা।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিপিএলের দশম আসরের প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই জয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান তুলে রংপুর। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি কুমিল্লার। ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন সুনিল নারিন। ইনিংসের প্রথম বলে উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে সেই ধাক্কা সামাল দিয়েছেন তাওহিদ হৃদয়।
এরপর ৩১ বলে অর্ধশতক তুলে নেন হৃদয়। শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ৬৪ রান করে দলীয় ১৪৩ রানে ভাঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি কুমিল্লার হাতে।
চারে নেমে চার্লস খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ৩ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার। ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে দলীয় সর্বোচ্চ ৫৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংস। দলীয় ১৭৩ রানে আউট হন তিনি।
এরপর আন্দ্রে রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজটা সহজেই সেরেছেন মঈন আলি। রাসেল অপরাজিত থেকেছেন ২ রান করে। আর মঈন ১২ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।
এর আগে, টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন দাস। পরে ব্যাট করতে নেমে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পরও জেমস নিশামের ৪৯ বলে ৯৭ রানের ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের সংগ্রহ গড়েছে রংপুর।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরুটা ভালো করতে পারেনি রংপুর। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তানভির ইসলামের বলে আন্দ্রে রাসেলের মুঠোবন্দী হয়ে সাজঘরে ফিরেন শামিম হোসেন। এরপর আরেক ওপেনার রনি তালুকদারও ফিরেন পরের ওভারেই। ফলে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পরে রংপুর।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ক্রিজে তখন সাকিব আল হাসানের সঙ্গী হিসেবে ছিলেন শেখ মাহেদী। তবে দলের বিপর্যয়ের সময় সাকিবও আজ নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি, রাসেলের বলে বর্ষণের মুঠোবন্দী হয়ে ব্যক্তিগত ৫ রানেই সাজঘরে ফিরেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
সাকিবের বিদায়ের পর ক্রিজে মাহেদীর সঙ্গী হন নিশাম। দলের প্রয়োজনের সময় তখন দুজন মিলে গড়েছিলেন ৩৯ রানের জুটি। এ দুজনের ব্যাটেই তখন সংগ্রহ বাড়িয়ে নিচ্ছিল রংপুর। তবে দলীয় ৬৬ রানে সুনীল নারাইনের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মাহেদী আউট হলে ভাঙে এ জুটি। এরপর ব্যাট হাতে মাঠে নেমে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন নিকোলাস পুরাণ। তবে তিনিও ফিরেছেন ১ চার এবং ১ ছয়ে ৯ বলে ১৪ রান করেই।
এদিকে একপ্রান্তে যাওয়া-আসা চলতে থাকলেও আজ ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে ছিলেন নিশাম। কুমিল্লার বোলারদের সামলে তিনি ঘুরিয়েছেন রানের চাকা। ৩১ বল খেলে ৪ চার এবং ৩ ছয়ে নিজের ফিফটি তুলে নেন তিনি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে নিশামকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন রংপুরের অধিনায়ক নূরুল হাসান সোহান।
দুজন মিলে গড়েছিলেন ৩৬ বলে ৫৩ রানের জুটি। সোহান আউট হন ২৪ বলে ৩০ রান করে। সোহান ফিরলেও শেষ পর্যন্ত নিশাম খেলেছেন ৮ চার এবং ৭ ছয়ে ৪৯ বলে ৯৭ রানের অপরাজিত এক ইনিংস। ক্যারিবীয় এই তারকার শতক ছোঁয়া ইনিংসের সুবাদেই ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় রংপুর।