রাজধানীর গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আজ শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্রব্যমূল্য অচিরেই কমে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর সবাইকে আস্থা রাখুন। পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বেশি টাকা দিয়ে আমদানি করতে হয়, বিক্রি করতে হয় তার চেয়ে কম দামে। ধৈর্যহারা হবেন না। শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন। দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসে পুরো টিম নিয়ে নেমে গেছেন জনগণের সংকট লাঘব করতে। মন্ত্রিসভাকে নিয়ে কর্মপরিকল্পনার পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তার মন্ত্রিসভার কেউ বসে নেই। সবাই কাজে লেগে গেছেন। এভাবে চললে আমরা অচিরেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। সামনে রমজান। মানুষের কষ্ট আমরা জানি। আমরা জনগণের সরকার।
এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের খেলা শেষ, এখন খেলা রাজনীতির। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও খেলা হবে। খেলা হবে হরতাল ও আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। ৩০ তারিখ আবার বিএনপির কালো পতাকা মিছিল। সেদিন আপনারা লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোথায় অক্টোবরের ২৮ তারিখ? সময় ঠিক এরকম। কোথায় ছিলেন এতদিন গয়েশ্বর? বলেছিলেন, অলিগলি খুঁজে পাব না, কে পালিয়েছে? অলিগলি খুঁজে পাননি। এক দোকানে গিয়ে বলছেন, আওয়ামী লীগের গুন্ডারা আমাকে খুঁজছে। সেই দোকানদার বলে আমিও আওয়ামী লীগ। যাবে কোথায়? দেখতে দেখতে ১৫ বছর। সামনে আরও ৫ বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর? কবে হবে আন্দোলন? রোজার আগে না রোজার পর?
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন তারা আইনগতভাবে মোকাবিলা করুক। অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত নয়, আইনি প্রক্রিয়ায় বের হয়ে যাবে। কোন দেশে অপরাধ করে শাস্তি হবে না? আমেরিকার কথায় আমরা ছেড়ে দেব? এটা কোনো কথা? তাহলে ট্রাম্পের (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বিচার কেন হচ্ছে? ৯১টি অভিযোগে ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে আমেরিকার আদালতে। যে দেশের প্রেসিডেন্ট আজকে শাস্তি পাচ্ছে। প্রেসিডেন্টের আদালতে দাঁড়ানোও শাস্তি। সেই দেশ আমাদের কীভাবে বলে অপরাধীদের ছেড়ে দিতে হবে! ২৫ হাজার না কত হাজার। আমাদের জেলে এত লোক নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ১১ থেকে ১২ হাজার বিএনপির অভিযুক্ত নেতা-কর্মী জেলে আছে।
বিএনপির আন্দোলনকে উদ্দ্যেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন চালান। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা করবেন, মানুষের রুটি-রোজগারের বাধা দেবেন, হরতাল-অবরোধের নামে অগ্নি-সন্ত্রাস করবেন, এটা কঠোর হাতে দমন করা হবে। এসব ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। অনেক ভোগান্তি এ দেশে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। আর এসব অপকর্ম করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। কঠোরভাবে দমন করব, এটাই সিদ্ধান্ত আমাদের। আপনারা যত আন্দোলন করুন, আমাদের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।
শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশটি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মুস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান শিখরসহ অনেকে।