আজ রোববার বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, এক্স বর্জনকারী বিজ্ঞাপনদাতাদের উপর ইলন মাস্কের এমন আক্রমণত্মক আচরণ বিশেষজ্ঞদের বিভ্রান্ত করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞাপনদাতারা যদি এভাবে চলে যেতে থাকে, আর ফিরে না আসে তাহলে এক্স বেঁচে থাকতে পারবে তো? নাকি দেউলিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি?
গত এপ্রিল মাসে এক্স অর্জনের বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক এমন সব মন্তব্য করেছিলেন, যা তার অদূরদর্শীতা প্রকাশ পায়।
বিজ্ঞাপনের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি ডিজনি শিশুদের চলচ্চিত্রের বিজ্ঞাপন এবং অ্যাপল আইফোনের বিজ্ঞাপন দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, তবে টুইটার বিজ্ঞাপনের জন্য একটি ভাল জায়গা।’
এখন সাত মাস পর ডিজনি এবং অ্যাপল আর এক্স-এ বিজ্ঞাপন দিচ্ছে না এবং মাস্ক এই সংস্থাগুলোকে বলছে ‘নিজের দিকে যাও’।
বুধবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি ‘বি’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন দেউলিয়াত্ব প্রকাশের জন্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞাপন বয়কট কোম্পানিটির জন্য বর্তমান অবস্থান কতটা ক্ষতি করছে তা বোঝা যাচ্ছে।
কোম্পানিটির জন্য গত বছর ৪৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করেন ইলন মাস্ক। আর এমন একটি কোম্পানি দেউলিয়া হওয়াটা অকল্পনীয় মনে হলেও অসম্ভব নয় বলেও জানায় প্রতিবেদনটিতে। কারণ এক্স অনেকটাই বিজ্ঞাপনের আয়ের উপর নির্ভরশীল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর এক্সের আয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ বিজ্ঞাপন থেকে আসে। আর এই বিজ্ঞাপনই হচ্ছে কোম্পাটির হার্ট। বুধবারের সাক্ষাৎকারে মাস্ক এই বিজ্ঞাপনের উপর-ই প্রধান্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, কোম্পানিটি ব্যর্থ হলে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপনদাতাদের বয়কটের কারণেই ব্যর্থ হবে, আর এটি কোম্পানিকে দেউলিয়া করে দিবে।
কলামিস্ট অ্যান্ড্রু রস সরকিন এবং এলন মাস্ক নিউ ইয়র্ক টাইমসের বার্ষিক ডিলবুক সামিটের সময় কথা বলেছেন। তখন শত শত কোম্পানির সাথে কাজ করে এমন এবিকুইটির মার্কেটিং কনসালটেন্সির প্রধান ক্লায়েন্ট অফিসার মার্ক গে বলেন, যারা কোম্পানি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাদের কেউ ফিরে আসছে এমন কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।
তিনি বলেন, মেয়াদ শেষ হয়েছে কিংবা বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিয়েছে এমন কেউ পুনরায় সেখানে বিনিয়োগের কোন পরিকল্পনা করছে বলে মনে হচ্ছে না। কিংবা কোন ধরনের কৌশলও তৈরি করছে না।
সর্বশেষ এক্স থেকে বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়ার তালিকায় শুক্রবার যোগ হয়েছে জায়ান্ট ওয়ালমার্ট।
জানা যায়, ২০২২ সালে টুইটারের বিজ্ঞাপনের আয় ছিল প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। ইনসাইডার ইন্টেলিজেন্সের অনুমান এই বছর এটি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র এক দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছিতে।
কোম্পানির প্রধান দু’টি ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে, কর্মচারির বেতন। যদিও এরই মধ্যে কয়েকে হাজার কর্মচারিকে চাকরি হারাতে হয়েছে। আর দ্বিতীয়টি হলো মাস্ক টুইটার কেনার জন্য যে ঋণ নিয়েছিল তা পরিশোধ করা। এতে রয়েছে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার। কোম্পানিকে এখন প্রতি বছর সুদের অর্থ পরিশোধ করতে হয় এক দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বা তার বেশি।
যদি কোম্পানি তার ঋণের সুদ প্রদান করতে না পারে কিংবা কর্মীদের অর্থ প্রদান করতে না পারে তাহলে এক্স দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। তবে এমন একটি অবস্থা এড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইলন মাস্ক।