ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে পেটানোর হুমকির অভিযোগে চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজারের মহেশখালীর আটজন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন।
আজ বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৪ মো. সালাউদ্দিনের আদালতে মামলাটির আবেদন করেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট এম এ হাশেম রাজু। রাজু কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর একই ব্যক্তি বাদী হয়ে একই ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালতে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত মামলাটি গ্রহণ করেননি।
চট্টগ্রামে আবেদন করা মামলার আসামিরা হলেন- বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মুজিবুল হক চৌধুরী, মহেশখালীর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফরিদুল আলম, চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইফতেখার উদ্দিন বাবু, সাজ্জাদ, এহচান, ফরহাদ, নাছির ও সাইফুল।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইরফান উদ্দীন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আদালত মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন।”
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর বাঁশখালীর এক জনসভায় মুজিবুল হক চৌধুরী রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, “পিটার হাস বলছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পিটার হাস আমরা আপনাকে ভয় পাই না। আমরা মোটা চালের ভাত খাই। আপনি বিএনপির ভগবান। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ ইমান বেচি না। আপনাকে এমন মারা মারব, বাঙালি কত দুষ্টু তখন বুঝতে পারবেন।”
এছাড়াও একইদিন কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ফরিদুল আলম। সেই বক্তব্যের ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে ফরিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, “আপনারা জানেন, বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কী একটা পাতি হাঁস আসছে। পিটার হাস বদমাইশ। সে বিএনপির হয়ে যে অসভ্য কাজকারবারগুলো বাংলাদেশে করছে, তাকে পেলে জবাই করে মানুষকে খাওয়াইতাম। সেই পিটার হাস, বদমাইশ।”
এম এ হাশেম রাজু বলেন, “মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছেন। এ কারণে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হুমকিদাতাদের বিচারের মুখোমুখি করা প্রয়োজন।”