বুধবার ৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৯ আশ্বিন ১৪৩০
 

১৫ অক্টোবর ১ মিনিট ঢাকা শহরকে শব্দহীন রাখার সিদ্ধান্ত    ডেঙ্গুতে ১৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৫৬৪    ডিবি হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের হার্ট : ডিএমপি কমিশনার    ড. ইউনূস দুদকে যাচ্ছেন বৃহস্পতিবার    ইরানে এবার নীতি পুলিশের নির্যাতনে স্কুলছাত্রী কোমায়    সাকিবকে পাকিস্তানের অধিনায়ক বানিয়ে দিল আইসিসি!    খালেদাকে বিদেশে পাঠানো আদালতের বিষয় : আইনমন্ত্রী   
টার্গেট তরুণরা
নাটোরে চলছে রমরমা কিডনি বিক্রি
নাটোর প্রতিনিধি:
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৬:০৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৬:১২ অপরাহ্ন

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় বাজারে মাছ ও মাংসের মতো দরদাম করে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে কিডনি। এ উপজেলায় প্রায় ২০০ শতাধিক মানুষ বিক্রি করেছেন কিডনি। 

তবে তরুণদের টার্গেট করে চলে কিডনি সংগ্রহ। তরুণদের প্রতিটি কিডনি ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায় বেচাকেনা হয়ে থাকে। আর মধ্য বয়সীদের ২ থেকে ৪ লাখ টাকার মধ্যে কিডনি বেচাকেনা হয়। এসব কিডনি প্রতিবেশী দেশের বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। 

চক্রের সদস্যরা ও বিক্রেতারা জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ উপজেলার মোনায়েম হোসেন জেমসের নেতৃত্বে একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট তরুণদের টার্গেট করে কিডনি সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নাটোর জেলার গুরুদাসপুরে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ শতাধিক মানুষের কিডনি বিক্রি হয়েছে। 

কিডনি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দরিদ্র ও অসহায় মানুষরা তাদের কিডনি বিক্রি করেছেন। সিন্ডিকেটের দেখানো আর্থিক প্রলোভনে এসব মানুষরা কিডনি বিক্রি করেছেন।

কিডনি চক্রের সদস্য আব্বাসের মোড় এলাকার রশিদ জানান, জেমসের নেতৃত্বে কিডনি সিন্ডিকেট চলছে। তিনি ঢাকায় থেকে সব নিয়ন্ত্রণ করেন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কিডনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রুগীদের টার্গেট করে কিডনি কেনার লোক ঠিক করা হয়। এরপর দরিদ্র মানুষদের টাকার লোভ দেখিয়ে কিডনি কেনা হয়। বাজারে সব থেকে তরুণদের কিডনির চাহিদা বেশি। 

কিডনি বিক্রি করতে যাওয়া সাহাপুরের নজরুল ও তাঁর মা জানান, অভাব আর দেনার কারণে নজরুলের কিডনি বিক্রি করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এজন্য রশিদের সাথে যোগাযোগও করি। 

রশিদ জানান, ক্রেতা পাওয়া গেলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকায় কিডনি কিনবে। ঢাকাতে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হবে। বিক্রির কাজে কিডনি আব্বাস ও জেমস তাদের সহযোগিতা করবে।

চাচকৈড় বাজারের মধ্যমপাড়া এলাকার খৈবার ও কয়েকজন কিডনি বিক্রেতা জানান, তারা জেমস, রশিদ ও আব্বাসের মাধ্যমে প্রতিবেশি দেশে গিয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন। এজন্য তাদের ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। অভাবের কারণেই তারা এ কিডনি বিক্রি করেছেন।

কিডনি বিক্রি করতে গিয়ে ফিরে আসা একই এলাকার জিল্লুর রহমান জানান, কিডনি আব্বাস ও জেমসের প্রলোভনে কিডনি বিক্রিতে রাজি হয়েছিলাম। পরে ভুল বুঝতে পেরে ফিরেও এসেছেন।

এ চক্রের অন্য সদস্য আব্বাস ওরফে কিডনি আব্বাস জানান, তিনি নিজের কিডনি বিক্রি করেছেন। এজন্য অনেকেই তার কাছে কিডনি বিক্রির বিষয়ে পরামর্শ নিতে আসেন। কেউ আসলে পরামর্শ দেন। তবে চক্রের সাথে জড়িত না।

তবে চক্রের মূল হোতা তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোনায়েম হোসেন জেমস বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি ঢাকায় নিয়মিত হাসপাতালে যান এলাকার রুগীদের দেখাশোনা করতে। তবে কিডনি বিক্রির সাথে জড়িত নয়। তবে তার ব্যাংক হিসেবে প্রচুর টাকার লেনদেনের বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। 

চক্রের আরেক মূল হোতা মোনায়েম হোসেন জেমসের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চাঁদাবাজির একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। তার বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে প্রায় কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া একাধিকবার প্রতিবেশি দেশেও যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

নাটোরের সিভিল সার্জন ডাঃ মশিউর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত কিডনি বেচাকেনার বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, কিডনি পাচার সিন্ডিকেটের সাথে যারাই জড়িত থাকুক না কেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  নাটোর   







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft