ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী
দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে ‘আপনি আমাদের অনুপ্রেরণা’ প্রদত্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বজনীন মর্যাদা সম্পর্কে বোধোদয়ে প্রোথিত করার বিকল্প কিছু আছে কিনা আমার জানা নেই।
গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ৯ মে ২০২৩ ঢাকাস্থ চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক থেকে চীনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে’ নতুন করে এই ধরিত্রীর রাষ্ট্র পরিচালনা প্রক্রিয়ায় এত উঁচুমার্গের মন্তব্য আর কী হতে পারে!
আধুনিক বিশ্ব নারীর অধিকার-ক্ষমতায়ন-লিঙ্গ সমতার আদর্শে নতুন করে পুরো সমাজকে এক মাঙ্গলিক রূপদানে অবিরাম প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অন্যতম বৈশিষ্ট্যে সজ্জিত চলমান প্রেক্ষাপটে সর্বত্রই পুরুষ প্রাধান্যের প্রভাবই পরিলক্ষিত।
বিশেষ করে স্বল্প শিক্ষিত-অর্ধ শিক্ষিত-কুশিক্ষিত-অশিক্ষিত প্রায় অনগ্রসর বাংলাদেশে ধর্মান্ধতা-অপসংস্কৃতির মোড়কে সমগ্র জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক অংশের নারী সমাজকে অন্ধকারের গহ্বরে নিপতিত করার কদর্য পদক্ষেপ গ্রহণে তারা এখনো পিছপা হচ্ছে না। অন্ধকারের অশুভ শক্তিকে সংহার করে নারী শিক্ষা-নারী জাগরণে বিগত কয়েক বছরে যে অসাধারণ ভূমিকা পালন করে চলছেন; তিনি হচ্ছেন মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
উন্নত পশ্চিমা বিশ্বে বৈষম্যের দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভেদ করে প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নারীর অগ্রযাত্রা দৃশ্যমান। দক্ষিণ এশিয়ায় অধিকাংশ খাতে নারীর ক্ষমতায়ন অনেকটুকু স্থিতিমিত এবং নানা অজুহাতে নারী নেতৃত্বের বিকাশমানতা প্রায় সীমিত। লালসবুজ পতাকার প্রিয় মাতৃভূমি বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বের অনুপম অভ্যুদয় প্রশংসনীয় অধ্যায় রচনা করতে সক্ষম হয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিপুল কুসংস্কার-বাধাবিপত্তি অতিক্রান্তে যথাযোগ্য মর্যাদায় নারীদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করার কার্যকর কর্মপরিকল্পনা প্রগতির স্মারকরূপ পরিগ্রহ করেছে।
এটি সর্বজনবিদিত যে, পাশ্চাত্যের তুলনায় প্রাচ্য তথা বাংলাদেশসহ ভারতবর্ষে নারীনেত্রীর বিকাশ তেমন প্রাচীন কিছু নয়। মূলত পাশ্চাত্যের ১৭ শতকে উচ্চবিত্ত মহিলাদের গৃহস্থালি কর্মযজ্ঞ থেকে সামাজিক পরিম-ল অধিকমাত্রায় আকর্ষিত করে। ১৮ শতকের বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাণচাঞ্চল্য ও রাজনৈতিক সক্রিয়তা নারী সমাজের অংশগ্রহণকে অনেকাংশে প্রভাবিত করে।
সে সময় ইংল্যান্ড ও ইউরোপের মূল ভূখ-ের নারীরা শুধু সামাজিক ক্ষেত্রে নয়, আধুনিক ধ্যান-ধারণার সঙ্গে সম্পর্ক এবং তার চর্চা এক নতুন মাত্রিকতায় সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ইংল্যান্ডে এই মহিলা বুদ্ধিজীবীরা ‘ব্লুস্টকিংস বা জ্ঞানগরবিনী নারী’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে।
তারা সমসাময়িককালে বরেণ্য মনিষীদের বক্তব্য শুনে তা গ্রহণ-বর্জনের মতো চ্যালেঞ্জ প্রদান করে সমাজকে অনেক বেশি ঋদ্ধ করেছেন। ১৭৮৯ সালে বিপ্লবী নারী পরিষদের পক্ষ থেকে ফরাসী পুরুষদের বিরুদ্ধে উচ্চারিত হলো ‘আপনারা অতীতের সকল কুসংস্কার দূর করলেও, সবচেয়ে ব্যাপক ও প্রাচীনতম কুসংস্কারটিকে বহাল থাকতে দিয়েছেন।
এর ফলে গোটা দেশের অর্ধেক মানুষ রাষ্ট্রীয় পদ, অবস্থান, সম্মান, ও সর্বোপরি আপনাদের মাঝে অংশ গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।’ এই প্রেক্ষিতে নারীবাদীদের অন্যতম নেত্রী অলিমপি দ্য গোজ রচিত ‘ডিক্লারেশন অব রাইটস অব উইমেন অ্যান্ড সিটিজেনস’ গ্রন্থটি নতুন প্রণোদনায় নারীদের এগিয়ে যাওয়ার অধিকারকে সমুন্নত করে।
সময়ের পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নারী-পুরুষের সমান অংশীদারিত্ব। অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ও পারিবারিক সকল ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সফল পদচারণা রয়েছে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার-সম্মানিত বিরোধী দলের নেত্রী-সাংসদ-আইন-বিচার ব্যবস্থা-শিক্ষা-সংস্কৃতি-প্রতিরক্ষাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-সেবা খাতসহ প্রত্যেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তাদের অবারিত বিচরণ এক সমৃদ্ধ জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিভাত।
বিশ্বস্বীকৃত এসব অর্জনের পিছনে শেখ হাসিনার নিখাঁদ দেশপ্রেম-উন্নয়ন দর্শন-নির্ভীক ও দৃঢ়চেতা অভিপ্রায় প্রকৃত অধুনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নারীদের প্রতিনিধিত্ব সর্বত্রই সমাদৃত।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। নারীর আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। নারী অধিকার ও ক্ষমতায়নে প্রতিবেশী দেশসহ অনেক উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।
৮ মার্চ ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবী আছেন ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন। এর মধ্যে ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৯১ নারী।
১ লাখ ৯৫ হাজার ৬৭৯ জন প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবীর মধ্যে নারী ৩৯ হাজার ৭৮৭ জন। একই মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ শাখার তথ্য মতে, বর্তমানে ৩২৭ অতিরিক্ত সচিবের মধ্যে ৫৫, ৮৫৮ যুগ্ম সচিবের মধ্যে ১৬৪, ১ হাজার ৭০৪ উপসচিবের মধ্যে ৩৭০, ১ হাজার ৮৬৭ জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব-কমিশনারের মধ্যে ৬৮৯ জন নারী।
এছাড়া ১ হাজার ৪৪২ সহকারী কমিশনার বা সহকারী সচিবের মধ্যে নারী ৪৩৩ জন এবং ৬৪ জেলা প্রশাসকের মধ্যে ১০ জন নারী। ১০ অক্টোবর ২০২২ মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে মোট নারী সদস্যের সংখ্যা ১৫ হাজার ১৬৩ জন।
তন্মধ্যে ডিআইজি ২ জন, অ্যাডিশনাল ডিআইজি ৩ জন, পুলিশ সুপার ৭১ জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ১০৯ জন, সহকারী পুলিশ সুপার ১০০ জন, ইন্সপেক্টর ১০৯, এসআই ৭৯৭, সার্জেন্ট ৫৮, এএসআই ১ হাজার ১০৯, নায়েক ২১১, এবং কনস্টেবল ১২ হাজার ৫৯৪ জন। নৌ ও বিমান বাহিনীতে নারীরা পিছিয়ে নেই। সেনা বাহিনীতে সৈনিক থেকে শুরু করে মেজর জেনারেল পর্যায় পর্যন্ত রয়েছে। আছে প্যারা ট্রুপার নারী সদস্য। জাতি সংঘের শান্তি মিশনেও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তারা দায়িত্ব পালন করছে।
বিভিন্ন পরিসংখ্যান মতে, সরকারি সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি, অভিভাকদের সচেতনতা এবং শিক্ষার মর্যাদা প্রশ্নে মেয়েদের অংশগ্রহণের হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সকলক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।
শিক্ষকতা পেশায়ও এগিয়ে যাচ্ছে নারীরা। বর্তমানে ব্যাংকে ক্যারিয়ার গড়তেও আগ্রহ দেখাচ্ছে নারীরা। তারা ব্যাংকের চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে বসে দিচ্ছে নেতৃত্ব। ব্যাংকের নীতিনির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে অনেক নারী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, ২০২২ সালের জুন শেষে দেশের ব্যাংক খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ হাজার ৫৪৮। ২০২১ সালের একই সময়ে যা ছিল ২৯ হাজার ৭৭১। বর্তমানে ব্যাংকে নারী কর্মকর্তার হার ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সূত্র মতে, সার্বিকভাবে দেশের উন্নয়নে নারীদের অবদান ৩৮ শতাংশ। দেশের স্বাস্থ্য ও পোশাক খাতে নারীদের অবদান যথাক্রমে ৭০ ও ৮০ শতাংশ। সমাজ-অর্থনীতিতে নারীদের অবদান আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার তৃণমূল থেকে নারীদের ক্ষমতায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ফলে, বিশ্বব্যাপী লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ১১ ধাপ এগিয়ে ৭৫তম দেশের অবস্থান করছে।
৩ মার্চ ২০২৩ প্রকাশিত ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে নারী প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রস্তুতকৃত ‘উইমেন ইন পার্লামেন্ট ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন মতে, পৃথিবীর প্রায় সব দেশের পার্লামেন্টে নারী প্রতিনিধিত্ব রয়েছে যা আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।
উক্ত প্রতিবেদনে পার্লামেন্টে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিদের হারের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের ১৮৬টি দেশের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৭তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে ৩৫০ আসনবিশিষ্ট মহান জাতীয় সংসদে ৭৩ জন নারী সদস্য রয়েছে।
এর মধ্যে ৫০টি সংরক্ষিত মহিলা আসন এবং ৩০০ আসনের মধ্যে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছে ২৩ নারী। প্রতিনিধিত্বের দিক থেকে এই হার প্রায় ২১ শতাংশ। নির্বাচন কমিশন সূত্রে ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের সর্বাধিক তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ৪৫ জন নারী চেয়ারম্যান জয়লাভ করে। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান হয়েছিল ২৬ জন নারী।
ইতোমধ্যে বিশ্বনন্দিত সফল-সার্থক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী বিজয় বিশ্বখ্যাত নারীনেত্রী ও সুদক্ষ রাষ্ট্রপ্রধান শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, মার্গারেট থেচার, লেডি ন্যান্সি এ্যাস্টর, লিওনর সুলিভ্যান, মার্গারেট চেজ স্মিথ, মার্থা গ্রিফিথস, এলা গ্র্যাস্যে, শার্লি চিশলম, বার্নাডেট ডেভলিনের একই কাতারে শুধু নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেননি, অনেক ক্ষেত্রে এদেরকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রণত পথিকৃৎ হয়েছেন।
ধরিত্রী-সমুদ্র-সীমান্ত-মঙ্গা-সততা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিজয়ী দূরদর্শী নেত্রীর সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অতি উঁচুমার্গের অভিধায় শুধু মহদাশ্রয় তৈরি করেননি, পুরো বাঙালি জাতি-রাষ্ট্রকে সুমহান মর্যাদায় সমাসীন করেছেন।
২০১৯ সালে প্রকাশিত উইকি লিকসের জরিপ অনুসারে, ভারতের শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, ব্রিটেনের মার্গারেট থ্যাচার এবং শ্রীলঙ্কার চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গাসহ খ্যাতিমান মহিলা সরকার প্রধানদের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য দায়িত্ব পালনকারী বিশিষ্ট মহিলা নেত্রীর তালিকায় স্থান পেয়েছে। জরিপে তাঁকে নারীদের পুনরুত্থানের আইকন বিশেষণে অভিষিক্ত করা হয়েছে।
৮ নভেম্বর ২০২২ প্রকাশিত মার্কিন অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক সাময়িকী ফোর্বসের ২০২২ সালের বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪২তম অবস্থানে রয়েছেন। বিশ্বব্যাপী রাজনীতি-মানবসেবা-ব্যবসাবাণিজ্য এবং গণমাধ্যম খাতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে আসা প্রভাবশালী নারীদের এই তালিকায় ২০২১ সালে তাঁর অবস্থান ছিল ৪৩তম স্থানে।
প্রধানমন্ত্রী নারী নেতৃত্বের উচ্চকিত পুরোধার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালে সম্মানজনক ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন। বাংলাদেশ এবং এশিয়া ও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাঁর নেতৃত্বে নারী শিক্ষা ও নারী উদ্যোক্তার অনবদ্য উন্নয়ন-প্রসারের জন্য এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের মানদ-কে অতি তাৎপর্যপূর্র্ণ বিবেচনায় বিগত সময়ে এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শিনজো আবে।
এ পুরস্কার প্রাপ্তির অনন্য তালিকায় আরও রয়েছেন বিশ্ব বরেণ্য-নন্দিত ব্যক্তিত্ব তথা জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোডা, জাতিসংঘের সাবেক শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার সাদাকো ওগাতা, চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল ব্যাসলেট, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসনসহ প্রমুখ।
পৃথিবী নামক এই গ্রহে সুদূরপ্রসারী নারী নেতৃত্বকে সুসংহত করার মহাপরিকল্পনায় শেখ হাসিনার অগ্রগণ্য উদ্যোগ সর্বত্রই সমাদৃত। শুধু দেশীয় কর্মযজ্ঞে নয়; আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মেধা-প্রজ্ঞা-দৃঢ়চেতা-নির্ভীক সাহসিকতায় নির্মিত গুণাবলীর রসায়নে নবতর প্রচ্ছদ তৈরিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিপূর্ণতায় তুলনাহীন। দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে ‘আপনি আমাদের অনুপ্রেরণা’ প্রদত্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বজনীন মর্যাদা সম্পর্কে বোধোদয়ে প্রোথিত করার বিকল্প কিছু আছে কিনা আমার জানা নেই।
গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ৯ মে ২০২৩ ঢাকাস্থ চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক থেকে চীনকে ছাড়িয়ে যেতে পারে’ নতুন করে এই ধরিত্রীর রাষ্ট্র পরিচালনা প্রক্রিয়ায় এত উঁচুমার্গের মন্তব্য আর কী হতে পারে! সামগ্রিক বিবেচনায় বিশ্ববাসীর জন্য অহংবোধের যে ভিত্তি জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা করেছেন এটি শুধু মাঙ্গলিক উপমা নয়; সৃজন-মনন-সংস্কৃতি-কৃষ্টি ও বিশ্ব ঐতিহ্যের এক নান্দনিক স্মৃতিস্তম্ভে পরিণত হবে- নিঃসন্দেহে এই প্রত্যাশাটুকু ব্যক্ত করা মোটেও অমূলক নয়।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়