
রাজশাহীতে দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ঘোড়ায় চড়ে কনের বাড়িতে এসেছেন বর। পালকিতে হেলেদুলে ফিরেছেন বৌ নিয়ে। বিয়ের দাওয়াতে আমন্ত্রিত সাংসদ এসেছেন হেলিকপ্টারে চড়ে।
এমন আয়োজনে দুই পরিবার সহ এলাকাবাসী বেশ আনন্দিত। ঘোড়ায় চড়া সেই বর মতিউর রহমান ওরফে হালিম রাজশাহী বাগমারার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের ভরট্ট গ্রামের বাসিন্দা।
শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে কনের বাড়ি সোনাডাঙ্গা গ্রামে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বরপক্ষের ভাষ্যমতে, হালিমের দাদা ঘোড়ায় চেপে গিয়ে পালকিতে করে তার দাদিকে বিয়ে করে এনেছিলেন। এ গল্প তিনি ছোটকাল থেকেই শুনে আসছেন।
পরিবার থেকেই মাঝেমধ্যেই একমাত্র আদরের সন্তান হালিমকে বলা হতো, ‘ঠিক একই কায়দায় তোরও বিয়ে দেব, বৌ আনব পালকিতে, পাশে তুই থাকবি ঘোড়ায় চেপে।’ সেই কথাগুলোর পূর্ণতা দিতেই এ আয়োজন।
বর হালিম সম্প্রতি চীন থেকে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করে দেশে ফিরেছেন। তিনি স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল মান্নান ও স্বাস্থ্যকর্মী হালিমা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান।
সম্প্রতি পারিবারিক সিদ্ধান্তে তার বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয় সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল হকের মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফারহানা আঁখির সঙ্গে।
শনিবার দুপুরে কনের বাড়িতে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বরের চাচা মামুন উর রশীদ জানান, গ্রামের এক প্রবীণ কাঠ মিস্ত্রিকে দিয়ে তিন দিন ধরে বানানো হয় পালকি। নিজেদের তৈরি সেই পালকিতে করে ভাতিজাবউকে বাড়িতে আনা হয়েছে।
এদিকে বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্য এসেছিলেন হেলিকপ্টারে চড়ে। রাজশাহী-৪ আসনের এমপি ইঞ্জি. এনামুল হক স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিয়েতে অংশ নিতে ঢাকা থেকে দুপুর ১২ টার দিকে হেলিকপ্টারে বাগমারার ওই গ্রামের একটি খেলার মাঠে নামেন। পরে বিয়ে বাড়ি যান। আনুষ্ঠানিকতার পর নবদম্পতিকে দোয়া করেন।
বিকেল ৪টার পর বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে হালিম ঘোড়ায় চেপে নববধূকে পালকিতে করে নিজ বাড়িতে আসেন।
কনের বাবা ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল হক বলেন, ‘একমাত্র মেয়ের বিয়ে ধুমধাম করে দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় ৩ হাজার গ্রামবাসীকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। গ্রামীণ ঐতিহ্যকে রক্ষা করা এবং নিজেদের ইচ্ছা পূরণের জন্যই উভয় পরিবার এ উদ্যোগ নিয়েছি। ছেলে পক্ষের আয়োজনের ভিন্নতায় তিনি ভীষণ খুশি।’
জ/আ