সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে হাতে তৈরী করা লাকড়ি চুলার। বিগত বছর উপজেলার ঘরে ঘরে গ্যাসের চুলা জ্বলতে দেখা গেলেও ইদানিং তা চোখে পড়ছে না।
দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে বর্তমানে গ্যাসের চুলা বন্ধ করে হাতে বানানো চুলা ব্যবহার করছেন উপজেলার অধিকাংশ গৃহীনিরা। জানা য়ায়,৭৫০ টাকার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ১২৫০ থেকে ১৩৫০ টাকায় ঠেকেছে।
তাই গ্যাসের চুলার বিকল্প হিসেবে উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে দিন দিন বাড়ছে গ্রহীনীদের হাতে বানানো লাকড়ি চুলা। পাশাপাশি বিভিন্ন কোম্পানির বানানো বন্ধু চুলাও।
আগে লাকড়ি চুলার তেমন বিক্রি না হলেও বর্তমানে বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রায় প্রতিনিয়তই বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি লাকড়ি চুলা এখন ৩ শত থেকে সাড়ে ৩ শত টাকায় বিক্রি করছি।
রায়গঞ্জ উপজেলার হাটপাঙ্গাসী বাজারে মাটির চুলা বিক্রি করতে আসা আবু বক্কার বলেন,আগে সারাদিন বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে ১ থেকে ২ টি চুলা বিক্রি করতে পারলেও বর্তমানে ৬ থেকে ৭ টি চুলা বিক্রি করতে পারছেন।
সে আরও জানায়,গ্যাসের দাম বাড়ানোর সাথে সাথে বাড়ী এসে এখন লাকড়ি চুলার জন্য আগাম বায়না দিয়ে যায়।
এদিকে কামারখন্দ উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের গৃহীনি সালমা বেগম সাথে কথা হলে তিনি জানান, এতো দামের গ্যাস ক্রয় করে আমাদের পক্ষে রান্নাবান্না করা সম্ভব না।
তাই কষ্ট করে হলেও লাকড়ি দিয়ে নিজের হাতে বানানো চুলায় রান্না করছেন। আর তাছাড়া হাতে বানানো চুলাগুলোতে রান্না করতে তেমন লাকড়ির প্রয়োজন হয় না।
গ্যাসের চাইতেও খরচ কম হচ্ছে বলে জানান ।
উল্লাপাড়া উপজেলা সলপ বয়োস্কা গৃহিনী আলো বেওয়া (৮৭) জানায়,বাপ দাদার আমল থেনে মাইটা আইস্যালে (চুলায়) রানছি গোষি,হোলা,বাশের কুঞ্চি,গাছের মরা ডাল পালা,গাছের পাতা দিয়া।
কিছুদিন আগে ঠুস (গ্যাস) বাড়াছিল দেহা যায় না ,ফুস ফুস কইরা জলে।এহুন বলে দাম আরও বাড়াইছে। ঠুেসর আর দরকার নাইÑআগের মত লাকড়ি আইসালেই রানমু।
এব্যাপারে, চৌহালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন জানান, এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে অধিকাংশ গ্রামে গ্যাসের সংযোগ নাই । গ্যাসের সিলেন্ডর ক্রয় করে তাদের চাহিদা পূরন করত।
কিন্তু গ্যাসের মূল্য বেশি হওয়ায় ধনাঢ্যদের ছাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষের রান্না করে এখন শোভা পাচ্ছে লাকড়ির চুলা।