![]() |
সৌদি বাদশা সমীপে
বহু কাঙ্ক্ষিত জমজমের পানি পানের আকুতি
মোঃ আক্তার হোসেন রিন্টু
|
নিশ্চয় সকল প্রশংসা তাঁরই যিনি এই আসমান ও জমিনের সব কিছুর মালিক। পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নির্দেশে ধর্মপ্রাণ লাখো মুসল্লি ছুটে চলেছেন পুণ্যভূমি আরবের বুকে। সেই মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট শুকরিয়া যিনি পবিত্র ভূমি সৌদি আরবের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছেন একজন সুযোগ্য বাদশার হাতে। প্রতি শতাব্দীতে একজন মুজাদ্দিদকে আল্লাহ পৃথিবীতে পাঠান। আপনি শুধু সৌদিরই বাদশা নন বরং গোটা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে স্বর্গীয় উপহারের সমতুল্য। আমরা মনে করি, আপনি আল্লাহ প্রেরিত একজন মুজাদ্দিদ। বর্তমান সময়ে ইসলামি বিশ্বাসকে পুনরুজ্জীবিত করতেই আপনার আগমন। এর আগেও আপনি ইসলামের বিভিন্ন পবিত্র স্থানগুলোর সংরক্ষণকালে সৌদি আরবে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ-লাখ মুসলমানকে আপনার আতিথেয়তা মুগ্ধ করেছে। পবিত্র জিলহজ মাসে আপনার মেহমানদারিত্ব সত্যিই ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে যুগে-যুগে। পবিত্র ভূমি সৌদি আরব হচ্ছে গোটা মুসলিম বিশ্বের কাছে এক আবেগ অনুভূতির নাম। তাইতো প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রতি বছর ছুটে যান আল্লাহ পাকের নির্দেশে হজ পালনে। হজ পালন শেষে হাজীগণ যখন নিজের বাড়ি ফিরতে চান তখন আল্লাহ পাকের নিয়ামতে পুণ্যভূমি আরবের বুক থেকে কিছু নিয়ামতপূর্ণ জিনিস নিয়ে ফিরতে চান পরিবার-পরিজনদের জন্যও।
জমজমের পানি পানে শুধু তৃষ্ণাই মেটে না; বরং ক্ষুধা নিবারণ হয়, রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হজরত মোহাম্মদ (সা.) সবসময় জমজমের পানি সঙ্গে রাখতেন। তিনি নিজে জমজমের পানি পান করতে পছন্দ করতেন। রোগের দাওয়াই হিসেবে অন্যদের জমজমের পানি পান করতে বলতেন। হজরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে- তিনি বলেন, হজরত মোহাম্মদ (সা.) জমজমের পানি পান করতেন। সফরে বের হলে জমজমের পানি সঙ্গে রাখতেন। এ পানি অসুস্থদের ওপর ছিটিয়ে দিতেন এবং তাদের পান করাতেন। জমজম কূপের পানি আল্লাহর কুদরতের এক বিস্ময়কর নিদর্শন। প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব হাজী হজ করতে যান, তারা নিজেরা জমজমের পানি পান করে থাকেন এবং দেশে ফেরার পথে পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজনের জন্য জমজমের পানি নিয়ে আসেন। হজরত ওমর রা.- হতে এ ব্যাপারে বর্ণিত আছে, তিনি জমজমের পানি পানের সময় পড়তেন- হে আল্লাহ কিয়ামতের দিনের পিপাসা নিবারণের উদ্দেশ্যে আমি এ পানি পান করছি। হে সম্মানিত বাদশা এ বিষয়ে আপনি আমার থেকেও সমুদ্রসম অধিক জানেন। বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের আমি একজন সাধারণ নাগরিক। গণমাধ্যমে কাজ করার সুবাদে জানতে পেরেছি, বাংলাদেশের হাজীরা যখন দেশে ফেরেন, তখন সকল হাজী পবিত্র জমজম থেকে কিছু পানি সঙ্গে নিয়ে ফিরতে চান। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বিষয়টি আপনাকে অবগত করছি যে, সৌদি এয়ারলাইন্সে এ পানি বহন করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। ফলে পবিত্র হজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হয়, তা সত্যিই ব্যথিত করে। এর থেকে পরিতাপের আর কী বা হতে পারে। পৃথিবীর সব থেকে হালাল ও সর্বোৎকৃষ্ট পানি থেকে একজন মুসলমান বঞ্চিত হবে। আল্লাহ আপনাকে যে সম্মান, যশ, খ্যাতি-ক্ষমতা দান করেছেন তা আমাদেরকেও গর্বিত করে। তাই আপনার নিকট অতি বিনয়ের সঙ্গে প্রার্থনা করছি, যেসব মুসলমান পবিত্র হজে যেতে পারেন না নানা কারণে, তাদের জন্য আল্লাহ পাকের এ নিয়ামতপূর্ণ পানি পানের সুযোগ করে দিলে হৃদয় থেকে দোয়া করবে। আল্লাহ আপনাকে সে ক্ষমতা দান করেছেন। আপনার একটি আদেশই এজন্য যথেষ্ট। আপনার সেই অনুকম্পাদেশের অপেক্ষায় গোটা বিশ্বের অগনিত মুসলিম উম্মাহ। লেখক: সম্পাদক দৈনিক জবাবদিহি |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |